আজ রাতেই যোগ হবে ‘লিপ সেকেন্ড’‍

২০১৫ সালের ৩০ জুন একটি বিশেষ দিন। এদিন মধ্যরাতে পৃথিবীর পারমাণবিক ঘড়িটিতে অতিরিক্ত একটি সেকেন্ড যোগ করা হবে। একে বলা হয় ‘লিপ সেকেন্ড’।

লিপ সেকেন্ড বিষয়টা অনেকটা লিপ ইয়ারের মতো। তবে লিপ ইয়ারের ক্ষেত্রে যেখানে অতিরিক্ত একটা দিন যোগ করা হয় সেখানে লিপ সেকেন্ডের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত একটা সেকেন্ড যোগ করা হবে। লিপ ইয়ারের অতিরিক্ত দিনটি যোগ করা হয় ৪ বছর পর পর আর লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয় সাধারণত দেড় বছর পর পর।

অন্যান্য দিন ঘড়ি ২৩:৫৯:৫৯ মিনিট থেকে ০০:০০:০০ মিনিটে যায় এবং নতুন দিন শুরু হয়। কিন্তু লিপ সেকেন্ড যোগ করার দিনে ২৩:৫৯:৫৯ মিনিট থেকে ২৩:৫৯:৬০ বেজে তারপর ০০:০০:০০ বাজবে এবং নতুন দিন শুরু হবে।

লিপ ইয়ারের মূল কারন পৃথিবীর বার্ষিক গতি, অপরদিকে লিপ সেকেন্ডের মূল কারন পৃথিবীর আহ্নিক গতি। পৃথিবী কিন্ত ঠিক ঠিক ৩৬৫ দিনে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে না বরং করে ৩৬৫ দিন ৬ ঘন্টায়। ফলে বছর ঠিকই ৩৬৫ দিনে রেখে চার বছর পর ৬×৪=২৪ ঘন্টা অর্থাৎ এক দিন যোগ করা হয় (ফেব্রুয়ারি মাসের ২৯ তারিখ)।

অপরদিকে একদিন সমান ৮৬,৪০০ সেকেন্ড। কিন্ত পৃথিবীর অনিয়মিত গতির কারণে ০.০০২ সেকেন্ড কম হয়। দেড় বছর পর পর এক সেকেন্ড যোগ করে সেটা পূরন করা হয়। অবশ্য ১৯৭২ সালে যখন থেকে লিপ সেকেন্ড যোগ করা শুরু হয় তখন প্রায় প্রতি বছরই লিপ সেকেন্ড যোগ করা হতো। সর্বশেষ লিপ সেকেন্ড যোগ হয় ২০১২ সালের ৩০ জুন।

পৃথিবীর আহ্নিক গতি কমে যাওয়াই লিপ সেকেন্ডের এর মূল কারণ। প্রশ্ন হচ্ছে, পৃথিবীর এই ঘূর্ণন গতি কমে যায় কেন? এর কারণস্বরুপ বলা যায় পৃথিবীর ওপর চাঁদের চৌম্বকীয় আকর্ষণ রয়েছে যা পৃথিবীর গতিকে শ্লথ করে দেয়। এর কারনে পৃথিবীতে জোয়ার-ভাটা হয়।

এছাড়া আরো কিছু ভৌগলিক কারণ রয়েছে যেমন, আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত, বড় ধরনের কোন ভূমিকম্প এবং পৃথিবীর কেন্দ্রীয় অংশের সাথে বাহিরের স্তরের আপেক্ষিক নড়াচড়া ইত্যাদি। পৃথিবীর নিখুঁত সময় পরিমাপের জন্য যে পারমানবিক ঘড়িগুলো আছে সেগুলোর সাথে পৃথিবীর ঘূর্ণনের সঠিক সমতা রক্ষা করাই লিপ সেকেন্ডের মূল উদ্দেশ্য।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন