দূষিত বাতাসের শহরগুলো

মেক্সিকো সিটিতে বায়ু দূষণ মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ায় দেশটির সরকার জনগণকে ঘরে থাকতে এবং যানবাহন বের না করতে উপদেশ দিয়েছে। ওজোনস্তরের পরিমাণ গ্রহণের মাত্রার দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় শহরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গত এক দশকে প্রথমবারের মত এই সতর্ক অবস্থা জারি করা হল।

 

শুধু মেক্সিকো সিটিই নয়, ক্রমবর্ধমান বায়ু দূষণের ফলে হুমকির মুখে রয়েছে বিশ্বের বড় বড় সব শহরগুলো। অধিক পরিমাণে বৃক্ষনিধন, অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন ও কলকারখানা, জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহারসহ আরও নানা কারণে এই বায়ু দূষণের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে কয়েকটি শহরে এই মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে আরও আগেই এবং সৃষ্টি করছে নানা সমস্যা।

 

উলান বাটোর, মঙ্গোলিয়া

উলান বাটোরে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পড়ার কারণে সেখানে বায়ু দূষণের পরিমাণ বেড়ে যায়। শীতকালে এখানে কাঠ এবং কয়লা পুড়িয়ে বসবাসস্থল গরম রাখা হয় যেগুলো ৭০ ভাগ বায়ু দূষণের জন্য দায়ী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত বায়ু দূষণের মাত্রার চাইতে এখানকার বায়ু ৭ গুন বেশি দূষিত।

বেইজিং, চীন

বেইজিঙয়ে বায়ু দূষণের মাত্রা এতোটাই বেশি যে বিজ্ঞানীরা শহরটিকে বসবাসের অযোগ্য বলছেন, যদিও এ শহরে প্রায় ২০ লাখ মানুষের বাস। পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ বায়ু দূষণের কারণে মারা যায় যার অর্ধেকেই চীনে।

লাহোর, পাকিস্তান

পাকিস্তানের ২য় বৃহত্তম এই শহরে বায়ু দূষণ এক অন্যতম চিন্তার বিষয়। অত্যধিক যানবাহন, ময়লা-আবর্জনা এবং আশপাশের মরুভূমির ধূলা এই দূষণের প্রধান কারণ।

নয়াদিল্লী, ভারত

১ কোটি মানুষের এই আবাসস্থলে গত ৩০ বছরে যানবাহনের পরিমাণ ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ লাখ। এছাড়াও কয়লা নির্ভর কারখানাগুলো মিলে প্রায় ৮০ শতাংশ বায়ু দূষণ করে থাকে এই শহরের।

রিয়াদ, সৌদি আরব

মরুভূমির ধূলা, ঘন ঘন বালুঝড় আর তীব্র অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবের কারণে এই শহরে বায়ু দূষণের মাত্রা আশঙ্কাজনকহারে বেশি।

কায়রো, মিশর

অতিরিক্ত যানবাহন এবং কলকারখানা বৃদ্ধি পাওয়ায় কায়রোর বায়ুর মান নেমে গিয়েছে। ফলে শহরটির মানুষ শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুস ক্যান্সারের মত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

ঢাকা, বাংলাদেশ

ম্যাক্স-প্লাঙ্ক ইন্সটিটিউটের জরীপ অনুযায়ী, প্রতিবছর ঢাকায় ১৫ হাজার মানুষ বায়ু দূষণের কারণে মারা যায়। গবেষকদের মতে, এই শহরের বাতাসে ক্ষতিকর সালফার ডাই অক্সাইডের মাত্রা সবচেয়ে বেশি।

মস্কো, রাশিয়া

প্রচুর পরিমাণ হাইড্রোকার্বনের উপস্থিতির কারণে এই শহরের বায়ুও অত্যন্ত দূষিত। তবে পশ্চিমা বাতাসের কারণে শহরটির পশ্চিম অংশের বায়ুর মান তুলনামূলক ভালো।

মেক্সিকো সিটি, মেক্সিকো

ভৌগোলিক অবস্থান এই শহরের বায়ু দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ। শহরটির ৩ দিকেই পাহাড় থাকার কারণে এখানে সালফার ডাই অক্সাইড এবং হাইড্রোকার্বন জমে দূষিত বাতাসের সৃষ্টি করে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন