নববর্ষের রকমফের

নববর্ষ এমন একটি সময় যখন থেকে একটি নতুন ক্যালেন্ডারে নতুন বছর গননা শুরু করা হয়। বিভিন্ন সংস্কৃতিতে এই উৎসবটি নানানভাবে ও নানান দিনে পালিত হয়। জর্জিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বিশ্বজুড়ে নতুন বছর জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে গন্য করা হয়।

রোমান ও জুলিয়ান উভয় ক্যালেন্ডারেই নতুন বছর গননার এই  হিসাবটি মিলে যায়। পাশ্চাত্য সংস্কৃতি অনেক প্রসারিত হলেও এখনও অনেকে তাদের ধর্ম ও সংস্কৃতি অনুযায়ী নতুন বছর পালন করেন।

জানুয়ারি মাসে জর্জিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বেসামরিক নতুন বর্ষ বিশ্বজুড়ে পালিত হলেও জানুয়ারি মাসের ২১ জানুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত বছরের প্রথম চাঁদ উঠার ওপর নির্ভর করে পালিত হয় চাইনিজ নববর্ষ। যা Lunar new year নামেও পরিচিত।

চীনাদের এটি জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। যেহেতু ভিয়েতনামের অধিবাসীরা চাইনিজ ক্যালেন্ডার ব্যাবহার করেন তাই চাইনিজ নববর্ষ যেদিন পালিত হয় সেদিন ভিয়েতনামেও নববর্ষ পালিত হয়। আগামী বছর (২০১৫) ফেব্রুয়ারির ১৯ তারিখে চাইনিজ নববর্ষ পালিত হবে।

চাইনিজ নববর্ষ ১৫ দিনব্যাপী পালিত হয়। এ সময় চীনা লোকালয় সাজানো হয় সৌভাগ্য, সমৃদ্ধি ও সুখানুভব নিয়ে “couplets” (চাইনিজ কাব্য) লেখা রঙিন কাগজে। তারা অনেক জাঁকজমকপূর্ণ “Reunion Dinner”-এর আয়োজন করে। লাল খামে ভরে তারা ছোটোদেরকে উপহারও দেয়া হয়।

মার্চ মাসের ২৬ তারিখ ইন্দোনেশিয়ার অধিবাসীরা বালিনিজ (Balinese) নববর্ষ ন্যেপি (Nyepi) পালন করে। এই দিন ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তারা উপোস থাকে এবং ধ্যানমগ্ন হয়ে দিনটি নিরবতার সাথে পালন করে। ন্যেপি মূলত হিন্দু ধর্মালম্বীদের উৎসব হলেও বালির অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে নীরবতার সাথে দিনটি পালন করে।

পর্যটকদের জন্যও এই দিনটিতে রাস্তায় ঘুরাঘুরি করা বা সমুদ্রতীরে যাওয়া নিষিদ্ধ। আবাক করা হলেও সত্যি এমনকি সারাদিন স্থানীয় বিমানবন্দরটিও বন্ধ থাকে। শুধুমাত্র গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ক্ষেত্রে এই নিয়মটির ব্যতিক্রম ঘটে ।

বাঙ্গালিরা তাদের নববর্ষ ‘পহেলা বৈশাখ’-এর সকালবেলা বৈশাখ বরণের গান গেয়ে ও পান্তা-ইলিশ ভাজা খেয়ে নতুন বছরকে বরণ করে। মেয়েরা সাদা-শাড়ি লাল পাড় পড়ে এবং ছেলেরা পড়ে পাঞ্জাবি। দেশজুড়ে নানা মেলার আয়োজন হয়।

তামিলনাড়ুতে তাদের নববর্ষ পুঠান্ডু, পাঞ্জাবে বৈশাখী, নেপালে ভিক্রম সম্ভাট, আসামে রঙ্গালি বিহু, উড়িষ্যাতে বিশুভ সংক্রান্তি এবং মনিপুরিতে চেইরুবা পালিত হয় বৈশাখের প্রথম দিন অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল। সাধারনত নিজ নিজ সংস্কৃতি অনুযায়ী গান-বাজনা ও মেলার আয়োজন এর মাধ্যমেই পহেলা বৈশাখ সব জায়গায় বরণ করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন