ফোরজি সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য

বাংলাদেশে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ থেকে যাত্রা শুরু হয়েছে ফোরজি ইন্টারনেটের। প্রাথমিকভাবে চারটি অপারেটর ফোরজি সেবা প্রদানের লাইসেন্স পেয়েছে। ফোরজি চালু হওয়া একটু নতুন মাইলফলক। তবে অনেকেই ফোরজি সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন না। কী আছে এই ফোরজিতে?

ফোরজি হলো মোবাইল ইন্টারনেটের চতুর্থ প্রজন্ম, যা আপনার স্মার্টফোন অথবা ট্যাবলেটের সেলুলার সংযোগ বা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট কনটেন্ট ব্যবহারের সুযোগ দেয়।

ফোরজি সমর্থিত মোবাইল ফোন এবং সক্রিয় ফোরজি সংযোগের মাধ্যমে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনি ওয়াইফাই সংযোগের চেয়েও দ্রুতগতিতে মিউজিক ও ভিডিও স্ট্রিমিং, ফটো শেয়ারিং, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, অ্যাপস ডাউনলোড, ইমেইল দেখা ইত্যাদি করতে পারবেন।

আসুন জেনে নিই কিছু তথ্য যা আপনার হয়তোবা জানা নেই।

১। ফোরজি কেনো বলা হয়?
সাধারণভাবে বলা চলে, এই প্রযুক্তি হলো মোবাইল ডাটার চতুর্থ মান বা ধাপ। সাধারণ প্রতি দশকে নতুন মান উদ্ভাবন হয়। ১৯৮০ সালে ওয়ানজি আসে। ১৯৯১ সালে টুজি। এরপর ১৯৯৮ সালে আসে থ্রিজি। এরপর ২০০৯ সালে ফোরজি উন্মোচন করা হয়।

২। ফোরজিতে আপনি বিদ্যমান থ্রিজি নেটওয়ার্কের তুলনায় অন্তত তিনগুন দ্রুত গতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। ফলে বাফারিং ছাড়াই ভিডিও কিংবা মিউজিক স্ট্রিমিং করতে পারবেন। ফাইল ডাউনলোড ও আপলোড হবে আরও দ্রুত।

৩। ২০০৯ সালে যুক্তরাজ্যের টেলিকম অপারেটর ও২ (টেলিফোনিকা ইউকে লিমিটেড) সর্বপ্রথম পরীক্ষামূলকভাবে ফোরজি চালু করে।

৪। গ্রাহকদের জন্য ফোরজি উন্মোচন করার প্রায় তিন বছর আগে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর ইই তাদের থ্রিজি ১৮০০মেগাহার্টজ স্পেকট্রামকে ফোরজির উপযোগি করে।

৫। ২০১৩ সালে ফোরজির ব্যাপক সম্প্রসারণ হয়, যখন অফকম নিলামের মাধ্যমে ইই, ভোডাফোন এবং ও২ ফ্রিকোয়েন্সি গ্রহণ করে। এরপর অন্যান্য অপারেটররা কাজ শুরু করে।

৬। যুক্তরাজ্যে ফোরজি সেবা ৮০০ মেগাহার্টজ, ৯০০ মেগাহার্টজ, ১৮০০ মেগাহার্টজ ও ২৬০০ মেগাহার্টজে পরিচালিত হয়। বিভিন্ন দেশে এর ভিন্নতা রয়েছে।

৭। ফোরজি ব্যবহার করতে আপনাকে অবশ্যই ফোরজি রেডিও সম্বলিত স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটের প্রয়োজন হবে। বর্তমানে মধ্যম ও উন্নতমানের হ্যান্ডসেটগুলো ফোরজি সমর্থিক। যেমন- প্রথম মটো জি শুধুমাত্র থ্রিজি সমর্থন করতো। এরপর মটোরোলা এটির ফোরজি সংস্করণ বাজারে ছাড়ে। তাই কেনার আগে কিংবা ব্যবহারের আগে হ্যান্ডসেটটি ফোরজি সমর্থিত কিনা সেটি দেখে নিন।

৮। যুক্তরাষ্ট্রে ফোরজি সাধারণত লং টার্ম ইভাল্যুয়েশন (এলটিই) নামে পরিচিত। তারা প্রযুক্তির পরিবর্তে এর গতিকে প্রাধান্য দেয়।

৯। অনেকেরই ভুল ধারণা আছে যে ফোরজিতে থ্রিজির তুলনায় ডাটা বেশি খরচ হয়। আসলে উভয় ক্ষেত্রেই একই ডাটা খরচ হয়, শুধুমাত্র গতির পার্থক্য থাকে।

১০। আপনি যদি ফোরজি ডাটা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেন তাহলে এর কাভারেজ এরিয়া থেকে সরে গেলে ডাটা অ্যাকসেস বন্ধ হবে না। এটি থ্রিজি বা টুজিতে (যেটি পাওয়া যাবে) চলে যাবে।

১১। ফোরজির গতিতেই ইন্টারনেট সীমাবদ্ধ নেই। ইতিমধ্যেই ফাইভজি পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যেই এটি সাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন