যেসব সায়েন্স ফিকশন সিনেমার ভবিষ্যৎবাণী সত্যি হয়েছে

কোন বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে বর্ণিত প্রযুক্তি যদি সত্যি বাস্তবে রূপ নেয় তাহলে কিন্তু অবাক হওয়ার কিছু নেই। ১৮৭০ সালে জুলভার্নের লেখা ‘টুয়েন্টি থাউজেন্ড লিগস আন্ডার দ্য সি’ গল্পে বর্ণনা করা সাবমেরিনের সূত্র থেকেই পরবর্তীতে পৃথিবীর প্রথম সাবমেরিন তৈরি করা হয়।

এখন পর্যন্ত হলিউড এবং অন্যান্য ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে নির্মিত বিভিন্ন সায়েন্স ফিকশন সিনেমায় দেখানো অনেক প্রযুক্তিই পরে বাস্তবে আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। অনেক সিনেমায় করা ভবিষ্যৎবাণী সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। এমনই কয়েকটি সিনেমার নাম এখানে উল্লেখ করা হল।

মুভিঃ মেট্রোপলিস (১৯২৭)

প্রযুক্তিঃ মানুষ আকৃতির রোবট

Metropolis
ছবি : সংগৃহীত

ফ্রিৎজ ল্যাঙের পরিচালনায় নির্মিত ‘ম্যাট্রোপলিস’ পৃথিবীর প্রথম সায়েন্স ফিকশন সিনেমাগুলোর মধ্যে অন্যতম। সাদাকালো এই সিনেমাটিতেই প্রথম মানুষ আকৃতির রোবট দেখানো হয়। যদিও মেট্রোপলিস সিনেমায় দেখানো রোবটটি অনেক কিছুই করতে সক্ষম ছিল যা এখনো আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। তবে অনেক কিছুই তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।

মুভিঃ ওমেন ইন দ্য মুন (১৯২৯)

প্রযুক্তিঃ মহাকাশ ভ্রমণ

Women in the moon
ছবি : সংগৃহীত

যদিও ‘এ ট্রিপ টু মুন’ সিনেমায় প্রথম মহাকাশ ভ্রমণের ধারণা দেখানো হয়েছে কিন্তু সেটা খুব একটা বাস্তবসম্মত ছিল না। একটা বিশাল কামানের গোলায় মানুষকে বেঁধে একটা মানুষের মুখের মত দেখতে একটি চাঁদের দিকে ছোঁড়া হয়। তবে ‘ওমেন ইন দ্য মুন’ সিনেমায় মাটি থেকে রকেট উত্থাপন আর চাঁদের বায়ুমণ্ডলের অনেক কিছুরই মিল ছিল। যদিও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের স্পুটনিক ১ যাত্রা করার আরও ২৮ বছর আগে এই সিনেমা নির্মাণ করা হয়েছিল।

মুভিঃ ২০০১- এ স্পেস ওডিসি (১৯৬৮)

প্রযুক্তিঃ ট্যাবলেট কম্পিউটার

a space odyssey
ছবি : সংগৃহীত

স্ট্যানলি কুবরিকের নির্মাণ করা এই সাড়া জাগানো সিনেমাটিতে ২০০১ সালে পৃথিবীর প্রযুক্তি এবং মহাকাশ গবেষণা কেমন হবে তা দেখানো হয়েছে। এ সিনেমার অনেক প্রযুক্তির মধ্যে আমাদের কাছে এখন সবচেয়ে পরিচিত হচ্ছে ট্যাবলেট কম্পিউটার। এই সিনেমায় দেখানো ট্যাবলেটের সাথে বর্তমান ট্যাবলেটের অনেকটাই মিল রয়েছে। আর অ্যাপল তাদের আইপ্যাড বাজারে এনেছে ২০১০ সালে, এই সিনেমায় দেখানো সময়ের মাত্র ৯ বছর পর।

মুভিঃ স্টার ট্র্যাক ৩ঃ দ্য সার্চ ফর স্পক (১৯৮৪)

প্রযুক্তিঃ মোবাইল ফোন

Star Trek III Search for Spock
ছবি : সংগৃহীত

সায়েন্স ফিকশন সিনেমাগুলো থেকে বাস্তবে রূপ নেয়া প্রযুক্তির দিক থেকে বিচার করলে উপরের দিকে রয়েছে স্টার ট্র্যাক সিরিজের সিনেমাগুলো। থ্রিডি প্রিন্টার, ভিডিওফোন কমিউনিকেশন আর কম্পিউটার স্পিচ রিকগনিশনের মত অনেক প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়েছে বর্তমানে। তবে এদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মোবাইল বা মুঠোফোন।

প্রথম মুঠোফোনের আবিষ্কারক মার্টিন কুপার টাইম ম্যাগাজিনকে বলেছিলেন, তার মুঠোফোন আবিষ্কারের পেছনে স্টার ট্র্যাক সিনেমা অনেক অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

মুভিঃ টোটাল রিকল (১৯৯০)

প্রযুক্তিঃ চালকবিহীন গাড়ি

Total-Recall-Taxi
ছবি : সংগৃহীত

আর্নোল্ড শোয়ার্জনেগার অভিনীত এই ব্যবসাসফল সিনেমায় অনেক প্রযুক্তিই দেখানো হয়েছে যেগুলো এখনো আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। যেমনঃ মানুষের স্মৃতি ভুলিয়ে দেয়ার যন্ত্র বা অ্যানিম্যাট্রোনিক ছদ্মবেশ। তবে এখন পর্যন্ত যেটা আবিষ্কারের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে সেটা হচ্ছে চালকবিহীন গাড়ি। গুগল এবং আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান চালকবিহীন গাড়ি গত কয়েক বছর ধরেই পরীক্ষামূলকভাবে রাস্তায় ছেড়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন