প্রয়োজনে সরকারি সফটওয়্যার কেনার নীতিমালা : জয়

বর্তমানে বাংলাদেশ বিপিও খাতে ৩০০ মিলিয়ন ডলার আয় করছে। প্রায় ৪০ হাজার তরুণ-তরুণী এখন এই সেক্টরে কাজ করছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে আমরা ২০২১ সাল নাগাদ এই খাতে এক লাখ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবো বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

১৫ এপ্রিল (রোববার) বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০১৮ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, আমাদের সরকার ইন্টারনেটের দাম কমিয়েছে, অবকাঠামো গড়ে তোলার কাজ করেছে এবং দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল আর টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবলের কারণে ইন্টারনেট নিয়ে অনিশ্চয়তারও অবসান ঘটানো হয়েছে।

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং বা বিপিও খাতের অবস্থানকে তুলে ধরার লক্ষ্যে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে তৃতীয়বারের মতো আয়োজন করা হয়েছে দুই দিনের এ সামিট।

এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সজীব ওয়াজেদ বলেন, আমরা ৯৯৯ সেবার চমৎকার সাফল্য দেখেছি। কয়েকদিন আগে আমি ৩৩৩ সেবা কার্যক্রমও উদ্বোধন করেছি। এসবই কিন্তু সরকারি কাজ বেসরকারি উদ্যোগে করিয়ে নেওয়ার উদাহরণ। কেবল আউটসোর্সিং-এর বিষয় নয়, সরকারি সফটওয়্যার ক্রয়ের ক্ষেত্রেও দেশীয় সফটওয়্যারকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য আমি সবাইকে অনুরোধ করবো। আমাদের দেশে তৈরি সফটওয়্যার ব্যবহার করবেন বিদেশীরা আর আমাদের দেশের মানুষ সেগুলো ব্যবহার করতে পারবে না, সেটা কেমন করে হয়। দরকার হলে সরকারি সফটওয়্যার কেনার একটি নীতিমালা করবো।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বিশ্বব্যাপী বিপিও খাতের বাজার প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের বিপিও ব্যবসার বাজার ইতিমধ্যেই শত মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। সেই সম্ভাবনাকে সকলের সামনে তুলে ধরা এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার এখনই সময়। মোবাইল ফোন ইন্টারনেটে আমরা ফোরজি সেবা চালু করেছি; অচিরেই একে ফাইভজি-তে উন্নীত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান মোস্তাফা জব্বার।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, আমাদের দেশের মোট জনগোষ্ঠীর দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ। এ হিসেবে তরুণদের সংখ্যা প্রায় ১১ কোটি। এই তরুণ জনগোষ্ঠীই আমাদের সম্পদ। বিপিও খাতে এখন বাংলাদেশের প্রচুর দক্ষ জনবল প্রয়োজন। আমরা যদি এই তরুণদের প্রশিক্ষিত করে এই খাতে কাজে লাগাতে পারি তাহলে আমরা খুব দ্রুতই বিপিওর বিশ্ব-বাজারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ অর্জন করতে পারবো।

তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ বলেন, সরকারের সঠিক নির্দেশনায় বিপিও খাতকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে, এ খাতে আমাদের মেধাবী তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের অবারিত সুযোগ তৈরি হবে এবং এর মাধ্যমে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ-এর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবো।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী, বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ কে এম খায়রুল আলম ও বাক্য সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ।

দুই দিনের সামিটে মোট ১০টি সেমিনার ও একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে।

প্রথম দিনে ১. বিপিও অ্যাজ এ ক্যারিয়ার ফর ইয়ুথ, ২. গর্ভমেন্ট প্রোসেস আউটসোর্সিং- স্কোপস অব গভর্নমেন্ট ইন বিপিও, ৩. ক্রিয়েটিং দ্য নেক্সট জেনারেশন আউটসোসিং সার্ভিসেস ইন বাংলাদেশ, ৪. গ্লোবাল অপরচুনিটিস ফর ক্রিয়েটিভ ইকোনোমি, ৫.এডুকেশন: এ কি ইনস্টুমেন্ট টু অ্যাচিভ এসডিজি ও ৬. অ্যাকাউন্টিং প্রোসেস আউটসোর্সিং: পজিশননিং বাংলাদেশ এ ছয়টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

দ্বিতীয় দিন ১. আউসসোসিং ফর স্টার্ট-আপস: গ্রোয়িং টুগেদার, ২. ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভুলেশন: চ্যালেঞ্জেস ইন বিপিও, ৩. কাস্টমার-সেনট্রিক হেলথকেয়ার ডেলিভারি সিস্টেম অ্যান্ড বিপিও, ৪. রাইস অফ এআই অ্যান্ড দ্যা ইমপ্যাক্ট অন বিপিও শিরোনামে এ চারটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া একই দিন মেঘনা হলে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অনুষ্ঠিত হবে ক্যাপাসিটি ব্লিডিং ফর কলসেন্টার এজেন্টস শিরোনামে একটি কর্মশালা।

এবারের আয়োজনে ৬০ জন স্থানীয় স্পীকার, ২০ জন আন্তর্জাতিক স্পীকার অংশগ্রহণ করবে। দুই দিনের মূল্য আয়োজনের আগে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।

সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে’র আওতাধীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতর এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য) এর আয়োজনে এই সামিট অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন