জীবাণুনাশক হ্যান্ডওয়াশ-সাবানের কার্যকারিতা

                                              জীবাণুনাশক হ্যান্ডওয়াশ-সাবানের কার্যকারিতা

 

মীনা কার্টুনের সেই টিয়াপাখি মিঠুর কথা নিশ্চয়ই মনে আছে তোমাদের? সেই মিঠু যে “হাত ধোও, হাত ধোও” বলে চেঁচিয়ে বেড়াতো। আর মীনা সবাইকে শিক্ষা দিত যে নিয়মিত হাত ধোওয়া কতটা জরুরী।

                                           

বিকেলবেলা ফুটবল খেলে বাসায় ফিরেছ, সারা শরীর ঘামে ভেজা, দৌড়ে বাথরুমে ঢুকেই সাবান অথবা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোওয়া শুরু করলে। আজকাল চটকদার বিজ্ঞাপনের কল্যাণে তোমরা অনেকেই হয়তো জীবাণুনাশক সাবান অথবা হ্যান্ডওয়াশ ছাড়া আর কিছু ব্যবহার কর না। বিজ্ঞাপন থেকেই তোমরা জানো যে যেখানে-সেখানে কিলবিল করে ব্যাকটেরিয়া আর এরা সবাই মানুষের দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, আবার এদের কাজ হল শুধু তোমাদের পেটের অসুখ তৈরি করা, যেন এদের আর কোন কাজই নেই। আবার সাধারণ সাবান দিয়ে এদের হত্যা করা যাবে না, ব্যবহার করতে হবে “অসাধারণ” সাবান কিংবা হ্যান্ডওয়াশ। আর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের “অসাধারণ” সাবান কিংবা হ্যান্ডওয়াশই পারে এদের ৯৯% নির্মূল করতে, যার ফলে যারা সাধারণ সাবান ব্যবহার করে, তাদের তুলনায় অসাধারণ সাবান ব্যবহারকারীদের অসুখ হয় কম আর স্কুলে হাজিরাও থাকে শতভাগ, এসব চিত্র বিজ্ঞাপনে খুবই সাধারণ, তাই না? কিন্তু বাস্তব জীবনে এর কতভাগ সত্যি?

জীবাণুনাশক যে সাবান কিংবা হ্যান্ডওয়াশ আমরা ব্যবহার করি, তাতে জীবাণুনাশক উপাদান বলতে থাকে কার্বলিক অথবা ট্রাইক্লোসান।

এদের কতটুকু আসলে সত্যিকার অর্থে কাজের? আমেরিকার মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বিজ্ঞানী এইসব জীবাণুনাশক হ্যান্ডওয়াশ আর সাবানের ওপর একটি জরিপ করেন। জরিপে দেখা যায় যে সাধারণ সাবানের তুলনায় যারা জীবাণুনাশক সাবান ব্যবহার করে, তাদের পেটের অসুখ কিংবা শ্বসনতন্ত্রের অসুখের পরিমাণ খুব একটা আলাদা নয়। সাধারণ সাবান দিয়ে হাত ধুলে তা ব্যাকটেরিয়াঘটিত অসুখের সম্ভাবনা ৫০% কমিয়ে দেয়, আর জীবাণুনাশক সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ তা কমায় ৫০%-এর চেয়ে সামান্য কম। এ তো গেলো সাধারণ কথা, কিন্তু এখন এমন এক তথ্যের কথা বলবো, যা শুনে তোমরা চমকে উঠবে।

                                        

বিজ্ঞাপনে যেমন দেখায় ব্যাকটেরিয়ার কাজ শুধু তোমাদের পেটের অসুখ সৃষ্টি করা, আর কোন কাজই নেই এদের, এর বেশীরভাগই ভুল ধারণা। আমাদের শরীরে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া আছে, তাদের মধ্যে বেশীরভাগই আমাদের জন্য উপকারী। শরীরের অভ্যন্তরের ব্যাকটেরিয়াদের কথা আজ না-ই বা বললাম, কিন্তু শুধু যদি ত্বকের ব্যাকটেরিয়াদের উপকারিতার কথা বলি, তবুও কথা শেষ হবে না।

আমাদের ত্বকে কিছু ব্যাকটেরিয়া থাকে যারা এখানে স্থায়ী, এদের স্থায়ী ব্যাকটেরিয়া বলা যায়। এরা এখানে মোটামুটি বসতবাড়ি গড়ে ছেলেপুলে নিয়ে সুখেই আছে, এদের কাজ হল ত্বকের ওপর একটা স্তর তৈরি করা যাতে ত্বক সহজে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আর বাইরে থেকে যে ব্যাকটেরিয়াগুলো আমাদের ত্বকে এসে আশ্রয় নেয়, এদের আমরা পর্যটক ব্যাকটেরিয়া বলতে পারি, এদের মধ্যে কিছু আমাদের জন্য ক্ষতিকর, আর কিছু ক্ষতিকর নয়। 

চলো নিচে ছবির মাধ্যমে হাত ধোয়ার ধাপগুলো জেনে নেই smiley

 

 

 

 

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন