উপরের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন মাছের জন্য সিঁড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ এর মাধ্যমে মাছ উপর থেকে নীচে কিংবা নীচ থেকে উপরে যেতে পারে৷ কিন্তু মাছের জন্য সিঁড়ি! কথাটি শুনে অনেকেই অবাক হবেন। ভাববেন, মাছের আবার এই সিঁড়ির প্রয়োজন কেন? কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন নদীর যে অংশে বাঁধ দেয়া আছে সেই অংশটি মাছ পার হয় কীভাবে?
মাছেদের প্রাকৃতিক পরিযাণের বা মাইগ্রেশনের সময় প্রাকৃতিক অথবা কৃত্রিম বাধা (যেমন বাঁধ, জলপ্রপাত) অতিক্রমের জন্য ফিশ লেডারের প্রয়োজনীয়তা অনেক। অনেকেই ফিশ লেডারকে ফিশ পাস, ফিশ স্টেপ বা ফিশ ওয়েও বলে থাকে। বর্তমানে ৬ ধরনের ফিশ লেডার দেখতে পাওয়া যায়। Pool and Weir, Fishway, Fish Elevator, Rock-ramp Fishway, Vertical-slot Fish Passage এবং Fish Siphon।
ডিম পাড়তে কিংবা খাবারের সন্ধানে অনেক পথ পাড়ি দিতে হয় অনেক মাছের। এছাড়া, এমন অনেক প্রজাতির মাছ আছে যাদের প্রজনন ও বেঁচে থাকা নির্ভর করে নদীতে মাইগ্রেশনের উপর। Anadromous প্রজাতির মাছ (যাদের জন্ম মিঠা পানিতে কিন্তু জীবনের বেশীরভাগ সময় অতিক্রম করে সমুদ্রে এবং ডিম পাড়ার জন্য এই মাছগুলো আবার মিঠা পানিতে ফিরে আসে) যেমনঃ Salmon, Shad, Sturgeon প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় উজান স্রোতের দিকে যায় তাদের প্রজননের জন্য। কিন্তু প্রাকৃতিক অথবা কৃত্রিম বাঁধার কারণে তাদের প্রজনন ব্যাহত হয়। আর ঐসব প্রতিবন্ধক এলাকায় ব্যবহার করা হয় ফিশ লেডার। মজার ব্যাপার হল, এই সিঁড়ি এমন ভাবে তৈরি করা হয় যাতে মাছ অনায়াসে এই সিঁড়ি ব্যবহার করে উপরে উঠতে পারে। পানির স্রোতই মাছকে সাঁতার কেটে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে সাহায্য করে।
১৮৮০ সালে প্রথম ফিশ লেডার নির্মিত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের Rhode Island এর Pawtuxet Falls নামের একটি বাঁধের উপর। কিন্তু কাঠের তৈরি ছিল বলে পরবর্তীতে তা সরিয়ে কংক্রিটের ফিশ লেডার বানানো হয় ১৯২৪ সালে।