নেদারল্যান্ডসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সার্কাসে মানুষের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন প্রাণীর ব্যবহার বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রাণীরা সার্কাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হতে শুরু করে সতেরশ শতক থেকে। তখন থেকেই ইংল্যান্ডে প্রথম মানুষের সামনে প্রাণীদের আনা হয় বিনোদনের বস্তু হিসেবে। সেসময় একজন প্রাক্তন সার্জেন্ট ঘোড়া নিয়ে সার্কাসে খেলা দেখাতেন। তারই ধারাবাহিকতা এখনো চলে আসছে।
তবে শুধু ঘোড়াই নয়, এরপর থেকে বিভিন্ন প্রাণীর তালিকা বাড়তে থাকে সার্কাসে খেলা দেখানোর জন্য। হাতী, বানর, বাঘ, সিংহ, ভাল্লুক ইত্যাদি প্রাণী ব্যবহার করা হয় মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য।
বিভিন্ন প্রাণীর সাইকেলে চড়া, নিজেদের মাথার উপর দাঁড়ানো, বলের উপর দাঁড়িয়ে ভারসসাম্য রক্ষা, আগুনের রিঙের ভেতর দিয়ে লাফ দেয়া ইত্যাদি কসরত দেখে বহু বছর ধরে মানুষ হাততালি দিয়ে আসছে।
সার্কাসসহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক কাজে প্রাণীদের ব্যবহার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেদারল্যান্ড। এটি ৩২তম দেশ যারা এই সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। সংসদে এ বিষয়ক বিলটি উত্থাপন করা হলে বেশিরভাগ মন্ত্রীই এতে সায় দেয়।
সার্কাসে প্রাণীদের সাধারণত খুবই অস্বাস্ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে রাখা হয়। এদের যথাযথ খাবার, পানি এবং স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হয় না। প্রাণীগুলােকে ছােট খাঁচার ভেতর খাওয়া, ঘুম, মলমূত্রত্যাগ সব একই জায়গায় করতে হয়।
শুধু তাই নয়, এসব হিংস্র প্রাণীদের বশে আনতে এদের ওপর করা হয় অবর্ণনীয় অত্যাচার। একটি গোপন ভিডিও চিত্রে দেখা যায় একটি বাঘকে গলায় শেকল বেঁধে লাঠি দিয়ে মারতে মারতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আরেকটি ভল্লুককেও এভাবে লম্বা লাঠি দিয়ে মারা হচ্ছিল। হাতীকে বশে আনার জন্য বৈদ্যুতিক শকও দেয়া হয়।
Animal Defenders International (ADI) তাদের ‘স্টপ সার্কাস সাফারিংস’ নামক ক্যাম্পেইনে এসব ভিডিও দেখিয়েছে। তাদের মতে প্রাণীদের প্রতি এসব নিষ্ঠুরতা বন্ধে সরকারের সবার আগে এগিয়ে আসা উচিত।
সার্কাসে প্রাণীর ব্যবহার বন্ধ হলে অবৈধভাবে বহু প্রাণীর কেনাবেচাও বন্ধ করা যাবে বলে তাদের ধারণা।