খুব নিকট ভবিষ্যতেই একদিন রাতের আকাশে হঠাৎ করেই দেখা যাবে উল্কাবৃষ্টি। তবে অসংখ্য উল্কার এ বৃষ্টি প্রাকৃতিকভাবে হবে না, হবে মানুষের তৈরি করা।
পৃথিবীর আশপাশ দিয়ে কোন ধূমকেতু চলে গেলে সেটির ধ্বংসাবশেষ থেকে তৈরি হতে পারে প্রাকৃতিক উল্কাবৃষ্টি। আর উল্কার এই খণ্ড আমাদের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করলে বাতাসের ঘর্ষণে আগুন জ্বলে উঠে আর আলো সৃষ্টি করে।
জাপানের এই নতুন পদক্ষেপটি নিয়েছে ‘অ্যাল’ (ALE) এবং নাম দেয়া হয়েছে ‘স্কাই ক্যানভাস’ স্যাটেলাইট। এটি এমন একটি স্যাটেলাইট যেটি আকাশে কৃত্রিম উল্কাবৃষ্টি তৈরি করতে পারবে। খুব সম্ভবত আগামী ২ বছরের মধ্যেই এটি তার কক্ষপথে বিচরণ শুরু করতে পারবে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫০০ কিলোমিটার উপরের আকাশে ঘুরতে ঘুরতে এটি বায়ুমণ্ডলের দিকে ব্লুবেরি আকারের লৌহ গোলক ছুঁড়তে থাকবে। আর এই গোলকগুলো ঘণ্টায় ২৮ হাজার কিলোমিটার বেগে ছুটতে ছুটতে বিভিন্ন রঙের সৃষ্টি করে রাতের আকাশে অপরূপ দৃশ্যের অবতারণা করবে।
প্রাকৃতিক উল্কাবৃষ্টি যে আকারের খণ্ড থাকে কৃত্রিমটিতে সেগুলোর আকার বড় হবে যেন সেগুলো বেশি সময় ধরে জ্বলতে পারে। একই কারণে কৃত্রিম উল্কাখণ্ডের গতিও হবে তুলনামূলক কম। গোলকগুলো তৈরি করা হবে বিভিন্ন ধরণের ধাতু দিয়ে যেন এগুলো ভিন্ন ভিন্ন রঙের সৃষ্টি করে উল্কাবৃষ্টির সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
তবে মানুষকে এক নতুন অভিজ্ঞতা প্রদানের পাশাপাশি এই পদক্ষেপের পিছনে আরও একটি কারণ হয়েছে। মহাকাশে পাঠানো বিভিন্ন স্যাটেলাইট বা এদের অংশবিশেষের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর সেগুলো যখন বর্জ্য বা জঞ্জাল হিসেবে পৃথিবীতে ঝরে পড়ে তখন কি ধরণের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে সেটাই পরীক্ষা করে দেখার বিষয়। তবে অনেক বিজ্ঞানীই মনে করছেন, অ্যাল’এর এই কৃত্রিম উল্কাবৃষ্টির কারণে মহাকাশের উপগ্রহগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিন্তু অ্যাল’এর মুখপাত্র রি ইয়ামামোতো সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘এমনটা ঘটার সম্ভাবনা ১০ কোটি ভাগের ১ ভাগ’।