মাকড়সা কখনও উড়তে দেখেছেন। মাঝে মধ্যে শূন্যে কিছু মাকড়সা দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু ভালো করে লক্ষ করলে দেখবেন একেবারে মিহি চিকন সুতোর মতো জালের দ্বারা এটি ঝুলে রয়েছে।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, সম্প্রতি সত্যি সত্যি উড়ন্ত মাকড়সা খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের কিছু মাকড়সা জালের সাহায্য ছাড়াই উড়ে উড়ে এক গাছ থেকে অন্য গাছে যেতে পারে। মূলত এরা এদের অতিরিক্ত লম্বা লম্বা পাগুলো ব্যবহার করে ভাসতে ভাসতে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যায়।
যাদের কোন পাখা নেই, যাদের আগে কখনো উড়তে দেখা যায়নি, সেই প্রাণীর উড়ার ঘটনা বেশ অস্বাভাবিক, এমনটাই জানালেন বিজ্ঞানীরা। তবে হতে পারে বহু বছরের বিবর্তনের কারণে এসব মাকড়সার মধ্যে এই অভ্যাস চলে এসেছে।
ইউনিভার্সিটি অফ লুইসভিলের কীট বিশেষজ্ঞ স্টিফেন ইয়ানোভিক এবং তার সহকর্মীরা বেশ কয়েক বছর ধরে এমন সব পোকামাকড়ের সন্ধান করছিলেন যেগুলো সত্যি সত্যিই উড়তে পারে। পরীক্ষাটি খুবই সাধারণ ছিল, তারা একটি পোকা নিয়ে সেটিকে অনেক উঁচু থেকে ছেড়ে দিতেন।
দেখা গেছে, অনেক ধরণের পিঁপড়া, ম্যান্টিস এবং ঘাসফড়িঙ উড়ার ক্ষমতা রয়েছে (বলা ভালো বাতাসে ভাসতে পারা ক্ষমতা)। কিন্তু এরকম গুণসম্পন্ন কোন মাকড়সা এতোদিন পাওয়া যায়নি।
এরপর তারা আমেরিকার গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের ফ্লাটিস নামক এক ধরণের মাকড়সা পরীক্ষা করে দেখেন। এদের বেশ লম্বা লম্বা পা থাকলেও এরা একটা কয়েনের চেয়ে বেশি মোটা নয়। এরা খুব দ্রুতগামী এবং সহজে ছদ্মবেশও ধারণ করতে পারে। পানামা এবং পেরুর জঙ্গলে প্রচুর ফ্লাটিস মাকড়সা খুঁজে পান তারা।
দুটি জঙ্গলেই গবেষকেরা প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুট উচ্চতা থেকে মাকড়সাগুলো ছেড়ে দিয়ে দেখেন এরা খুব দ্রুত নিজেদের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে, মাথা উপর থেকে নিচে নিয়ে যেতে পারে এবং ভাসতে ভাসতে এক গাছ থেকে অন্য গাছে যেতে পারে। এমনকি মাত্র ৪ মিটার উঁচু থেকে ছেড়ে দিলেও এরা উড়তে পারে।