কলমের কালি শুকিয়ে যায় কেন ?

রঙ-বেরঙ্গের কলম ব্যবহার করতে কার না ভালো লাগে। অনেকের অনেক রকমের কলম দিয়ে লিখতে ভালো লাগে। কেউ বলপেন, কেউ জেল পেন আবার কেউ ফাউন্টেনপেন। বেশীরভাগ সময়ে আমরা লেখার কাজে বলপেন ব্যবহার করলেও অনেকে জেল কলম দিয়ে লিখতে বেশী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। জেল কলমের কালি সাধারণ কালির চেয়ে বেশ ঘন ও গাঢ় হয়। কাগজে এই কালির লেখা সাধারণ কালির চেয়ে আরও বেশী স্পষ্ট হয়ে ফুটে ওঠে। লেখা ছাড়াও অনেকে বিভিন্ন আঁকার কাজেও জেল কলম ব্যবহার করে থাকে।

বলপেনকে কেন এই নামে ডাকা হয় তা তোমরা নিশ্চয়ই জানো। খেয়াল করলেই দেখবে যে বলপেনের মাথায় একটি খুব ছোট বল থাকে, যেটি কলমের শীষ থেকে কালি বের হওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে, আর এই বলের কারণেই একে বলপেন বলে। এই বলটি না পড়ে যাওয়া পর্যন্ত, আর কালি শেষ না হওয়া পর্যন্ত একটি বলপেন দিয়ে বেশ ভালভাবেই লেখা যায়। কিন্তু জেল পেনের কালি খুব সহজেই শুকিয়ে যায় এবং জেল পেন ব্যবহারেও সাবধানতা মেনে চলতে হয়।

জেল পেনের কালি তৈরি করা হয় পানি ও বায়োপলিমারের মিশ্রণ দিয়ে, আর ঘন করার জন্য এতে যুক্ত করা হয় Copper Phthalocyanine ও Iron oxide। এই পদার্থগুলো খোলা অবস্থায় সহজেই বাতাসে মিশে যেতে পারে। এ কারণে জেল পেনের ক্যাপ অনেকদিন ধরে খোলা রেখে দিলে কালি শুকিয়ে যায়।

জেল পেনের কালির সান্দ্রতা ( Viscosity ) অনেক বেশী থাকে। সান্দ্রতা বেশী হওয়ার কারণে কলমের নিবে কালি কম আসে। সান্দ্রতা বেশী থাকে বলে কলমের ভিতরে কালির গতি বাধাপ্রাপ্ত হয়। মসৃণ তলে জেল পেন দিয়ে লিখে সাচ্ছন্দ্য বোধ হয়। তবে জেল পেন দিয়ে কখনোই ভেজা কাগজে লিখবে না কেননা ভেজা কাগজের উপর জেল পেন দিয়ে লিখা হলে, কালি পুরো কাগজে ছড়িয়ে যায়।   

বাতাসে মিলিয়ে যাওয়া ছাড়াও আরও অনেক কারণে জেল পেন কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। জেল পেনের কালি বেশ গাঢ় হওয়ার কারণে বেশীদিন ব্যবহার না করলে কালি জমাট বেঁধে যায়। এছাড়া কলমের নিবে কোনকিছু আটকে থাকলে কালি বের হতে পারে না বলে কলম কাজ করে না। কালি জমাট বেঁধে গেলে দু’হাতে কলমটি ধরে জোরে কিছুক্ষণ ঘষা দিয়ে দেখতে পারো, অথবা কলমটি রোদে কিছুক্ষন রেখে দিলেও কাজ হবে।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন