“সবচেয়ে বেশিদিন বাঁচে কোন প্রাণী?” ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিনে এমনই এক প্রশ্ন এসেছিল এ সপ্তাহে। আর তার উত্তরও মিলেছে।
মানুষের গড় আয়ু বর্তমানে ৭১ বছর। অর্থাৎ ২০১৫ সালে জন্মানো একটি শিশুর মোটামুটি ৭১ বছর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেকের কাছে এটা অনেক কম সময় মনে হতে পারে। কিন্তু অন্যান্য অনেক প্রাণীর তুলনায় এই আয়ুষ্কাল নেহাতই কম নয়। এই যেমনঃ মেফ্লাই নামক নারী পতঙ্গ মাত্র ৫ মিনিট বাঁচে। মিলিত হওয়া এবং ডিম পারার পরেই সে মারা যায়।
তবে প্রাণিজগতের অনেক প্রাণীই রয়েছে যারা বহুবছর বাঁচে। যেমন ধরুন স্পঞ্জের কথাই। অনেকেই ভুলে যান স্পঞ্জ আসলে এক রকম প্রাণী। সমুদ্রে বসবাস করা এ প্রাণীর প্রজাতিভেদে আয়ুষ্কাল বিভিন্ন। তবে এদের কোনটাই ১ হাজার বছরের কম বাঁচে না। আর গভীর সাগরের তলদেশে বাস করা Monorhaphis chuni প্রজাতির স্পঞ্জ বাঁচে প্রায় ১১ হাজার বছর। এছাড়া গভীর সমুদ্রে বাস করা কিছু কিছু মাছ এই যেমনঃ অরেঞ্জ রাফি বেঁচে থাকে প্রায় ১৭৫ বছর।
আইসল্যান্ডের সাগরে কিছুদিন আগে পাওয়া একটি কুয়াহগ ঝিনুক পরীক্ষা করে গবেষকেরা দেখেন সেটির বয়স হয়েছিল ৫০৭ বছর। যদিও এ জাতীয় ঝিনুক গড়ে ২২৫ বছর বাঁচে আর এর আগে পাওয়া এ ঝিনুকের সর্বোচ্চ বয়স ছিল ৪০৫ বছর।
আর স্তন্যপায়ী প্রাণীর কথা বিবেচনা করলেও এগিয়ে থাকে সমুদ্রের আরেক প্রাণী তিমি। বেশীরভাগ তিমিই ১০০ বছরের উপরে বাঁচলেও বাউহেড তিমি বাঁচে সবচেয়ে বেশি, প্রায় ২০০ বছর।
দেখা গেছে, গভীর সমুদ্রে বাস করা প্রাণীদের আয়ুষ্কাল অনেক হয়ে থাকে। এর কারণ হিসেবে অরেগন চিড়িয়াখানার পরিচালক ডন মুর বলেন, গভীর সমুদ্রের তাপমাত্রা অনেক কম থাকে। যার ফলে এখানে বাস করা প্রাণীদের মেটাবলিজম ধীর হয় এবং একারণে তাদের টিস্যু ক্ষয় হয় খুব কম।
ডাঙ্গায় বাস করা প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিদিন বাঁচে কচ্ছপ। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বছর ধরে বেঁচে থাকা কচ্ছপটির নাম জোনাথান। অ্যালডেব্রা প্রজাতির এ বিশাল কচ্ছপটির বয়স ১৮৩ বছর।
পাখিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয়ুর পাখিটির নাম হচ্ছে উইসডম। ৬৫ বছর বয়সী এ পাখিটি একটি লাইসন অ্যালবাট্রস। ছোট পাখিগুলো বড়জোর ৫ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। তবে বিপন্নপ্রায় কাকাপো (এক জাতের টিয়া) পাখি গড়ে ৬০ বছর পর্যন্ত বাঁচে।