স্কুলে সন্তানকে পাঠিয়ে অভিভাবকরা চিন্তিত হয়ে পড়েন। সন্তান স্কুলে ঠিকমতো পৌছেছে কিনা, ক্লাসগুলো করছে কিনা, বাড়ির কাজগুলো করছে কিনা কিংবা পরীক্ষার ফলাফল কি? এসব চিন্তা অভিভাবকদের মাথায় পড়ে থাকে। অন্যদিকে স্কুলগুলো তাদের শিক্ষার্থী সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য অভিভাবকদের কাছে পৌছাতে চান। শিক্ষার্থীদের পাঠ পরিকল্পনা, ক্লাস রুটিন, শিক্ষকদের রুটিন, বিভিন্ন নোটিশ, বেতন ইত্যাদির তথ্য জানানো, সমন্বয় কিংবা কোনো পরিবর্তন সম্পর্কে সফটওয়্যার, ওয়েব কিংবা অ্যাপসের মাধ্যমে পরষ্পরকে জানাতে চান। এসব সমস্যা সমাধানে একটি স্কুল পরিচালনায় এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের যাবতীয় কার্যক্রম ও হিসাব ব্যবস্থাপনা সহজ করতে তৈরি হয়েছে নতুন প্লাটফর্ম, ক্লাসটিউন (classtune)।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক তথা স্কুল পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট সকলকে একই ছাদের নিচে আনার জন্য সহজ ও দ্রুততম এই উপায়টি তৈরি করেছে দেশের অন্যতম সফটওয়্যার নির্মাতা ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান টিম ক্রিয়েটিভ। সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বিএএফ শাহীন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, এসএফএক্স গ্রিন হেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সার জন উইলসন স্কুলসহ বর্তমানে ঢাকার স্বনামধন্য অন্তত ১৫টি স্কুলে সফটওয়্যারটি পরিচালিত হচ্ছে।
মনে রাখাকে সহজ আর কাজকে ঝামেলাবিহীন করতে এই সফটওয়্যারটিতে প্রয়োজনীয় সকল ফিচারই রয়েছে। একদিকে যেমন স্কুল সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রমকে সহজ, উন্নত ও সুশৃংঙ্খল করে তোলে, অন্যদিকে ক্লাসটিউন অভিভাবকদের পরামর্শ এবং অংশগ্রহণ বৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি নিশ্চিত করে। ভালো ফলাফল ও স্কুলের কাজকে আনন্দময় করতে প্রয়োজনীয় সকল সুবিধাই রয়েছে ক্লাসটিউনে।
উপস্থিতি
সফটওয়্যারটির মাধ্যমে পুরো স্কুলের সব ক্লাস এবং শাখার শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির রেকর্ড এক জায়গাতেই দেখা যাবে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির খোঁজ এক ক্লিকেই দেখতে পারবেন স্কুলের অ্যাডমিন! একজন শিক্ষার্থী কতোগুলো ক্লাস মিস করেছে তাও জানা যাবে এক নিমিষেই। অভিভাবকরা তাদের সন্তান স্কুল বা ক্লাসে উপস্থিত হয়েছে কিনা, কতোদিন দেরি স্কুলে পৌছেছে তা জানতে পারবেন। একইভাবে শিক্ষার্থীরাও তাদের উপস্থিতি জানতে পারবে।
অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার
স্কুলগুলো তাদের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার সফটওয়্যারটিতে আপলোড করতে এবং সবাইকে সেই অনুযায়ী পরবর্তী পরিকল্পনা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারবেন। ফলে সারা বছরের ক্যালেন্ডার একসাথেই পাওয়া যাবে ক্লাসটিউনে। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে সারা বছরের পরিকল্পনাও সাজাতে পারবেন।
পাঠ পরিকল্পনা
ক্লাসটিউনে পাঠ পরিকল্পনা আপলোড ও প্রয়োজনমতো সংশোধন করার সুযোগ রয়েছে। তাই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পড়াশোনার পরিকল্পনা করা এখন আরও সহজ হবে।
পাঠক্রম
বার্ষিক পাঠক্রম পাওয়া যাবে অনলাইনেই। ক্লাস অনুযায়ী এবং পরীক্ষা অনুযায়ী সিলেবাস তৈরি করা এবং খোঁজ রাখা যাবে প্রতিটি ক্লাসের সিলেবাসের খবরাখবর। ক্লাসটিউনের মাধ্যমে এসব কাজ হবে সহজে।
রুটিন
ক্লাসটিউনে যেকোনো ক্লাস বা সেকশনের রুটিন তৈরি করা যাবে এবং সবার দেখার সুবিধার্থে প্রকাশ করা যাবে। রুটিনে কোন পরিবর্তন আসলে সাথে সাথে নোটিফিকেশনের মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া যাবে।
হোমওয়ার্ক
একজন শিক্ষার্থী বা একটি ক্লাসের বা পুরো স্কুলের হোমওয়ার্কের খোঁজ জানা যাবে এক জায়গাতেই। শিক্ষার্থীরা এটি দেখে হোমওয়ার্ক সম্পন্ন করতে পারবে সহজেই। অভিভাবকরাও সেটি জানার মাধ্যমে বাচ্চাকে সহযোগিতা করতে পারবেন।
ছুটি
জররী কাজে ছুটি প্রয়োজন? হাতে লেখা আবেদনপত্র ছাড়াই অভিভাবক কিংবা শিক্ষার্থী অনলাইনে ছুটির আবেদন করতে পারেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ আবেদনটি দেখতে, মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করতে পারবে। আবেদনকারী তার ছুটিটি মঞ্জুর হয়েছে কিনা তা নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানতে পারবেন। ফলে এখন উপস্থিতির সাথে ছুটির দিনগুলোকে সহজেই সাজিয়ে নেওয়া যাবে।
রিপোর্ট কার্ড
ক্লাস টেস্ট, পরীক্ষার নম্বর আর প্রজেক্ট রিপোর্ট এখন অনলাইনেই জমা থাকবে ক্লাসটিউনের মাধ্যমে। ফলে শিক্ষার্থীর ফলাফল জানতে বা জানাতে প্রিন্ট করা কাগজের প্রয়োজন নেই। অভিভাবকদেরও স্কুলে যাওয়া লাগবেনা।
পরিবহন
স্কুলের যাতায়াত ও পরিবহন পরিকল্পনা ক্লাসটিউনের মাধ্যমে আপলোড করার সুযোগ রয়েছে। এতে কোনো পরিবর্তন আনলে সাথে সাথে অভিভাবকদের নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া যাবে। ফলে অভিভাবকরা তাদের সন্তান কখন স্কুলের পরিবহনে উঠবে বা বাসায় পৌছাবে তা জানতে পারবেন। এতে সময়ের পাশাপাশি অভিভাবকদের চিন্তাও কমবে।
বেতন
স্কুলের বেতন দেওয়া নিয়ে আর কোন চিন্তা নেই। ব্যাংকে লাইন না ধরে ক্রেডিট কার্ড বা মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনেই স্কুলের বেতন জমা দেওয়া যাবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বেতন জমা দেওয়া ও বকেয়া বেতন প্রদানের জন্য নিয়মিত মনে করিয়ে দিবে ক্লাসটিউন। প্রয়োজনে রিমাইন্ডার চালু করেও রাখা যাবে।
সাক্ষাৎ আহবান
অভিভাবকরা প্রায়শই বাচ্চার বিষয়ে আলোচনার জন্য শিক্ষকদের সাথে সাক্ষাৎ করতে চান। এখন আর সাক্ষাৎ এর জন্য স্কুলে গিয়ে আলাদাভাবে সময় নিতে হবেনা। অভিভাবকরা সহজেই মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে সাক্ষাৎ আহ্বান করতে পারবেন। শিক্ষকদের সাথে সাক্ষাৎ চূড়ান্ত হলে নোটিফিকেশন পাবেন আবেদনকারী।
বিজ্ঞপ্তি
কোন জরুরী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে? চিন্তার কিছু নেই। একজন শিক্ষার্থী বা একটি ক্লাস বা পুরো স্কুলকে কোন বিজ্ঞপ্তি পাঠানো যাবে এখান থেকে খুব সহজেই। ফলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকরা সহজেই এই বিজ্ঞপ্তি জানতে পারবেন।
ইভেন্ট
শিক্ষার্থী, শিক্ষক আর অভিভাবকদের স্কুলের বিভিন্ন ইভেন্ট বা অনুষ্ঠান যেমন পিকনিক, অভিভাবক দিবস, বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান ইত্যাদি সম্পর্কে সহজেই জানানোর সুবিধা রয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে ইভেন্ট তৈরি ও পরিবর্তন করা যাবে। এছাড়া কতোজন শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছে তাও এক ঝলকে জানা যাবে।
শিক্ষকদের রুটিন
ক্লাসটিউনে শিক্ষকদের সুবিধার জন্য রয়েছে রুটিন আপলোডের ব্যবস্থা। প্রত্যেক শিক্ষকের আলাদা আলাদা রুটিন তৈরি করা যাবে। ফলে শিক্ষকরা তাদের রুটিন অনুযায়ী কার্যক্রম চালাতে পারবেন।
স্কুলের যাবতীয় ফর্ম
স্কুলের সব ফর্ম আপলোড করার সুবিধা থাকায় সবাই প্রয়োজনমত ব্যবহার করতে পারবেন। ফলে অফিসের কাজে বাড়বে কর্মদক্ষতা। শিক্ষক, শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকরা এটি পূরণ করে অনলাইনে সাবমিট করতে পারবেন।
ওয়েব ও মোবাইল অ্যাপসনির্ভর ক্লাসটিউন যেকোনো জায়গায় বসে অনলাইনে ব্যবহার করা যায়। ক্লাসে উপস্থিত না থাকলেও শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাস ও স্কুলের আপডেট পেতে পারে। সেই অনুযায়ী তাদের পরবর্তী ক্লাসের জন্য প্রস্তুত হতে পারে। অভিভাবকরাও তাদের সন্তানের অগ্রগতি জানতে পারেন। একইসাথে স্কুলের যাবতীয় কাজ সহজ ও সাবলীল হয়। প্রত্যেক ব্যবহারকারীর আলাদা ইউজার নেইম ও পাসওয়ার্ড থাকার কারণে তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
স্কুলগুলো তাদের শিক্ষার্থী বা ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুযায়ী এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে পারেন। সফটওয়্যারটি পরিচালনা করার জন্য আলাদা শিক্ষক বা জনবলের প্রয়োজন নেই। কারণ প্রতিটি স্কুলের জন্যই ক্লাসটিউনের পক্ষ থেকে একজন সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার নিয়োজিত থাকেন। তাই শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি কমাতে আপনার স্কুলে ক্লাসটিউন-ই হতে পারে একমাত্র সমাধান।
ক্লাসটিউন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে classtune.com ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন।