ছবি তোলার শখ মানুষের সেই পুরনো অভ্যাস। নিজের প্রতিকৃতি দেখতে পাওয়ার মত আনন্দ হয়তো আর কিছুতে নেই। বন্ধুরা মিলে বা কাছের কাউকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে গেলে বা কোনো রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে এক দুইটা ছবি না তুললে যেন কিছু একটা অপূর্ণতা রয়ে যায়! প্রাচীনকালে যখন ক্যামেরা ছিলো না, মানুষ গুহার দেয়ালে নানারকম পাথরের উপর চেহারা বা প্রতিকৃতি এঁকে রাখতো। প্রযুক্তির বিবর্তনে সেই প্রতিকৃতি ধারণ করার মাধ্যম হয় ডিএসএলআর ক্যামেরা কিংবা যেকোনো মাল্টিমিডিয়া মোবাইল ফোনের অত্যাধুনিক ক্যামেরা। হাতের স্পর্শে বা ইশারাতে মুহুর্তেই ১০/১২/১৫টি ছবি ধারণ করে ফেলতে সক্ষম এক একটি ক্যামেরা।
প্রস্তুতি নিয়ে ছবি তুলতে গেলেও কখনো কখনো দুই একটি ছবি খুবই হাস্যকর ভাবে ধারণ হয়। ছবি তোলার পরে দেখা যায় নিজের ছবির বা গ্রুপ ছবির মধ্যে কারও অপ্রত্যাশিত আবির্ভাব! যদিও মাঝে মাঝে ফটোগ্রাফারের ইচ্ছায় এই অপ্রত্যাশিত আবির্ভাব ঘটে থাকে কোন ব্যক্তি বা বস্তুর। বন্ধুবান্ধবের কল্যানে সেই হাস্যকর ছবিগুলোই আস্তে আস্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে উঠে। ছবির মধ্যে কোন ব্যক্তি বা বস্তুর অপ্রত্যাশিত আবির্ভাব হওয়ার ঘটনাকে ফটোবোমিং (Photobombing) বলা হয়। ছবি ছাড়া ব্যাপারটা যদি কোন ভিডিও ফুটেজের ক্ষেত্রে হয় তবে তাকে বলা হয় Videobombing।
২০০৯ সালের পর থেকে এই ফটোবোমিং এর ব্যাপারটা ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। মজা করে অনেকসময় এরকম ছবি তোলা হয়, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি ক্যান্ডিড শটে (অজান্তে যখন কোন মানুষের ছবি তোলা হয়ে থাকে) হয়।
ইতিহাসের প্রথম ফটোবোমড ছবি মনে করা হয় উপরোক্ত ছবিটিকে। স্বাভাবিকভাবে বসে থাকা দুইজন মহিলার পেছন দিয়ে এসে তৃতীয় একজন মাথা বের করে দেন।
এছাড়া, ২০১৩ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শপথ অনুষ্ঠানে যখন প্রথম আমেরিকান আইডল বিজয়ী কেলি ক্লার্কসন গান গাচ্ছিলেন তখন বিল ক্লিনটন ছবির মধ্যে মাথা বের করে সবার দৃষ্টি কেড়ে নেয়।
২০১৪ সালে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ গেমসে দুইজন অস্ট্রেলিয়ান অ্যাথলেটের ছবির মাঝে Elizabeth II এর উপস্থিতি ফটোবোমিং এর আরেকটি মজার ঘটনা।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, ২০১৪ সালে “কলিন্স ইংলিশ ডিকশনারি” এর ওয়ার্ড অফ দ্যা ইয়ার নির্বাচিত হয় এই “Photobomb”শব্দটি।