বলা নেই কওয়া নেই, পুরো আকাশ হঠাৎ করে কালো হয়ে এল। শুরু হল কি তুমুল বৃষ্টি। এই তুমুল বৃষ্টিতে মিথিলা আনন্দ কে দেখে। আজ স্কুল নেই আর Homework ও নেই। সারাটা দিন মজা করে কাটবে আজকে। কিন্তু এই বৃষ্টিতে খিচুড়ি যেন না হলেই নয়। তার উপর টিভিতে খিচুড়ি রান্না দেখে মিথিলার ক্ষুধা যেন এইবার আকাশ স্পর্শ করল। আর না।। এই বলে যখন মিথিলা টিভি বন্ধ করতে গেলো তখনি দেখলো টিভি ভিতরে বসে থাকা পাক্কা রাঁধুনি প্রেসারকুকারে খিচুড়ি রান্না করছে আর মধুর সরে বলছে যে, ‘তৈরি হয়ে গেল সুস্বাদু খিচুড়ি মাত্র কয়েক মিনিটে।’
মিথিলা পুরাই অবাক। কিভাবে প্রেসারকুকারে এত তাড়াতাড়ি রান্না সম্ভব !
প্রেসারকুকারে যে খাবার সাধারণত দেরিতে সেদ্ধ হয় তা দ্রুত সেদ্ধ করা যায়। প্রেসারকুকার মূলত অ্যালুমিনিয়াম ধাতুর তৈরি । যার ফলে সহজে তাপ এর মধ্যে দিয়ে পরিবহণ করতে পারে না। প্রেসারকুকারের ঢাকনির উপরে একটি পিন বা ভাল্ব থাকে যা এর মধ্যের অতিরিক্ত চাপ বের করে দেয়।
তবে কোন কারণে যদি এই পিন নষ্ট হয়ে যায় তাহলে অতিরিক্ত চাপে বিস্ফোরণ ঘটে যেতে পারে তাই প্রেসারকুকারের পাশে সেফটি ভাল্ব থকে যা বিস্ফোরণের মতো কোন কাণ্ড হওয়ার আগেই অতিরিক্ত চাপ বের করে দেয়। যখন প্রেসারকুকার অতিরিক্ত চাপ বের করে দেয় তখন Whisling শব্দ বের হয় প্রেসারকুকার থেকে।
আমরা জানি, যে কোন স্থানে চাপ কম থাকলে অল্প তাপেই পানি ফুটতে শুরু করে যেমন পাহাড়ের উপর বায়ুচাপ কম থাকায় সেখানে ৬৫-৭০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পানি ফুটতে শুরু করে। একইভাবে যেখানে চাপ বেশী থাকে সেখানে পানি ফুটাতে সময় ও বেশী লাগে। প্রেসারকুকারে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয় ফলে বদ্ধ পাত্রে পানি ফুটে বাস্পে পরিণত হয়ে অতিরিক্ত চাপের সৃষ্টি করে। সেই চাপের ফলে প্রেসারকুকারে পানি ফুটানোর জন্য প্রয়োজন হয় ১১৫-১২০ ডিগ্রী সেলসিয়াস কিন্তু যেখানে ১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পানি ফুটতে আরম্ভ করে। এই অতিরিক্ত চাপের কারণে প্রেসারকুকারে খাবার দ্রুত সিদ্ধ হয়। যতো বেশী শক্ত খাবার দেওয়া হবে সিদ্ধ হতে সময় ততো বেশী লাগবে।
প্রেসারকুকার ব্যবহারে রান্না খুব দ্রুত হয় এবং সময়ের ও অপচয় কম হয় কিন্তু না জেনে অবশ্যই প্রেসারকুকার ব্যবহার করা উচিৎ নয় কারণ যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই ব্যবহারের আগে এই ব্যবহার অবশ্যই ভাল করে জানতে হবে।