আমাদের শরীরে কোথাও কেটে গেলে বা আঘাত লাগলে আমরা তীব্র ব্যথা অনুভব করি। কিন্তু নখ কাটলে আমরা কোন ব্যথা অনুভব করি না। নখ কাটলে যদি ব্যথা লাগতো তাহলে কেউই বোধহয় নখ কাটতো না এবং আমাদের সবার নখই খুব লম্বা হতো !
হাতে-পায়ে মিলে আমাদের বিশ খানা নখ আছে। সব মৃত কোষের সমন্বয়ে গঠিত বলে নখ কাটলে আমরা ব্যথা অনুভব করি না। নখ আমাদের শরীরের এক বিশেষ উপাদান যার উৎপত্তি চামড়া থেকে। কেরাটিন ( Keratin ) নামক এক বিশেষ পদার্থ দিয়ে নখ তৈরি। কেরাটিন মূলত এক প্রকার প্রোটিন। আঙ্গুলের চামড়ার অভ্যন্তরে নখের ভিত্তি অবস্থিত। নখের নিচের চামড়া শরীরের যে কোন অংশের চামড়ার মতোই। তবে নখের নিচের চামড়ায় আছে নমনীয় তন্তু। এই তন্তু নখের সাথে আটকে থাকে ও নখগুলোকে নির্দিষ্ট স্থানে রাখে।
সাধারণত নখ পুরু হয় কিন্তু চামড়ার ভিতরে নখের গোড়াটি হয় খুব পাতলা। নখের গোড়ার কাছাকাছি অংশটি সাদা ও অর্ধবৃত্তাকার হয়। একে লুনিউল বলা হয়ে থাকে। তোমরা কি জানো, আঙ্গুলের নখ বছরে দুই ইঞ্চি হারে বাড়ে ! পায়ের নখ হাতের নখের তুলনায় ধীরে বড় হয়। তবে মানুষের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে নখের বৃদ্ধিও তুলনামুলকভাবে কমে যায়।
নখ ভঙ্গুর বস্তু। পুষ্টিকর পদার্থের অভাবে নখ খুঁত যুক্ত হয়। এর ফলে নখ ফেটে বা ভেঙ্গে যেতে থাকে। তুষার অঞ্চলে তুষার স্পর্শে নখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আঙ্গুলের অগ্রভাগকে নখ রক্ষা করে থাকে বলে নখ আমাদের শরীরের জন্য দরকারী উপাদান। মেয়েদের ক্ষেত্রে, তাদের সৌন্দর্যের সাথে নখের সখ্যতা বিদ্যমান। মেয়েরা নানা রং এ তাদের নখ রঞ্জিত করে থাকে।
মানুষ ছাড়াও জীবজন্তুরও নখ আছে। তোমাদের হয়তো জানা নেই যে, শিম্পাঞ্জীর নখ আমাদের নখের মতোই দেখতে ! সিংহ, চিতা, বিড়াল ও কুকুরের থাবায় নখ থাকে। এমনকি গরু বা ঘোড়ার পায়ের ক্ষুর এক ধরণের নখ।
নখ মৃতকোষ হওয়ার কারণে এখানে কোন Nerve Cell থাকে না। আসলে Nerve Cell এর মাধ্যমে আমরা দেহে ব্যথার অনুভূতি পাই। তাই নখ কাটলে আমরা কোন ব্যাথা অনুভব করি না। একই কারণে চুল কাটলেও আমরা কোন ব্যথা অনুভব করি না।