আমরা সবাই জানি বাংলাদেশের এভারেস্ট জয়ের কাহিনী। শুধু এভারেস্ট নয়, পৃথিবীতে এমন আরও অনেক উঁচু উঁচু পাহাড় রয়েছে যেগুলো দু:সাহসিক মানুষ জয় করে চলেছে। এভারেস্ট যেমন বরফের পাহাড় তেমনি রয়েছ সুউচ্চ পাথরের পাহাড়। কিন্তু চাইলেই সহজে সুউচ্চ এসব পাহাড়ে উঠা বা নামা যায় না, এর জন্য দরকার উপযুক্ত প্রশিক্ষণ আর কিছু সরঞ্জাম।
দড়ি এবং আরো কিছু সরঞ্জাম ব্যবহার করে খাড়া উঁচু পাথরের পাহাড় থেকে নামার এ চ্যালেঞ্জিং কাজটাকে বলে অ্যাবসেলিং বা রেপেলিং পর্বত অবরহন।
অ্যাবসেলিং করার জন্য যেটি প্রথমে যা দরকার তা হল ব্যক্তিগত নিরাপত্তা। সুউচ্চ পাহাড় চূড়ায় উঠে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সেফটির কথা ভুলে একবার যদি পিছলে পড়ে যায় তাহলে জীবন ওখানেই শেষ। এজন্য দরকার সেফটি হেলমেট, ক্লাইম্বিং হারনেস, গ্লাভস, নি প্যাড, সেফটি সুজ ইত্যাদি।
অ্যাবসেলিং এর জন্য দরকার লম্বা দড়ি যা চূড়া থেকে গন্তব্য পর্যন্ত পৌঁছায়। এক্ষেত্রে দড়িটা হল স্ট্যাটিক রোপ নামের বিশেষ দড়ি যা ভারে কম প্রসারিত হয় ।দড়িটাকে এমন যায়গায় আটকাতে হবে যাতে ভারে ছুটে না আসে। এক্ষেত্রে বড় কোন গাছ থাকলে কাজটা সহজে হয়ে যায়। কিন্তু পাথরের পাহাড়ে গাছ পাওয়া মুশকিল। তাই আটকানোর জন্য ব্যবহার করা হয় রক ক্লাইম্বিং ইকুইপমেন্ট যেমনঃ নাট, হেক্সেস, স্প্রিং লোডেড কামিং ডিভাইস ইত্যাদি। দড়িটি নোঙরের সাথে আটকিয়ে নিচে ফেলে দিতে হয়। এবার রেপাল ডিভাইস দড়ির সাথে জুড়ে দিতে হয়, যা নামার সময় গতি নিয়ন্ত্রণ করে। ক্যারাবিনার সাহায্যে নিজের শরীরে লাগানো ক্লাইম্বিং হারনেস রেপাল ডিভাইস এ যুক্ত করা হয়। এর পর শুরু করা যায় নিচের গন্তব্যে যাওয়ার প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে খাড়া পাহাড়ে দড়ির উপর ভার দিয়ে অনেকটা হেঁটে নামার মতো করে নামতে হয়।
অনভিজ্ঞ অ্যাবসেলিং কিংবা গাইড ছাড়া অ্যাবসেলিং একটি বিপদজনক কাজ। জার্মান পর্বতারোহী Pit Schuber এর মতে ২৫% অ্যাবসেলিং এ মৃত্যুর কারণ হলো সঠিকভাবে নোঙর করতে না পারা।
বিপদজনক কাজ এবং পরিবেশগত ক্ষতির কথা চিন্তা করে অ্যাবসেলিং অনেক দেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।