সমুদ্রতীরে গেলে বা খেলার সময় সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বকরক্ষায় অনেকেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন। এটা ব্যবহার করলে মানুষের চামড়ার উপরিভাগ রোদে পোড়া থেকে রক্ষা পায়।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে ‘এই সপ্তাহের প্রাণী বিষয়ক অদ্ভুত প্রশ্ন’ বিভাগে একজন প্রশ্ন করেন, ‘প্রাণীরা কি আদতে কোন সানস্ক্রিন ব্যবহার করে?’
পশু, পাখি বা মাছ কোন প্রাণীই সানস্ক্রিন ব্যবহার করে না। কিন্তু তাদের গায়েও রোদ লাগে এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি তাদেরও ক্ষতি করে থাকে।
‘ই-লাইফ’ জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে, মাছ, পাখি, সরীসৃপ এবং উভচর প্রাণীদের দেহে একধরণের জিন থাকে যেটি গাডুসল উৎপন্ন করে সানস্ক্রিন হিসেবে কাজ করে থাকে। গাডুসল তাপ ছড়িয়ে দেয় এবং সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি শোষণ করে নেয়।
জেব্রাফিশ নিয়ে গবেষণাগারে অনেক পরীক্ষা করে দেখা যায় এই মাছের দেহে উৎপন্ন গাডুসল দিয়ে মানুষের জন্য উন্নতমানের সানস্ক্রিন তৈরি করা সম্ভব। ইস্ট ছত্রাকে গাডুসল প্রবেশ করিয়ে দেখা গেছে এটা বাণিজ্যিকভাবেও উৎপাদন করা সম্ভব।
তবে বিভিন্ন প্রাণীর দেহে সানস্ক্রিন বিভিন্ন রকম হতে পারে। জলহস্তীর ঘাম তৈরি হয় রেড এবং অরেঞ্জ পিগমেন্টের সমন্বয়ে।
২০০৪ সালে নেচার পত্রিকার একটি গবেষণা জানায়, রেড পিগমেন্টে অ্যান্টিবায়োটিক থাকে এবং অরেঞ্জ পিগমেন্ট অতিবেগুনী রশ্মি শোষণ করে। সুতরাং এই দুটি যখন একসাথে কাজ করে তখন জলহস্তীর দেহ সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পায়।
ম্যান্টিস চিংড়ির চোখে এমএএ নামক এক ধরণের অ্যামিনো এসিড থাকে যা প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন হিসেবে কাজ করে। আবার ওয়েস্ট আফ্রিকান লাংফিশ কোন সানস্ক্রিন তৈরি করতে না পারলেও তারা নিজেদের দেহকে ঠাণ্ডা রাখতে জানে। এরা মিউকাস দিয়ে এক ধরণের খোল তৈরি করে মাটিতে পড়ে থাকে যা সূর্যের হাত থেকে তাদের রক্ষা করে।