সকালে ঘুম থেকে উঠে স্কুল। যানজট পেরিয়ে ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত হয়ে বাসায় ফিরে গোসল, খেয়ে আবার কোচিং। এই চক্রের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছে।
আপনার সন্তানের শৈশব-কৈশোর। হয়তো পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করছে, কিন্তু মুখ দেখবেন নিষ্প্রাণ ও ক্লান্ত। হারিয়ে যাচ্ছে স্বতঃস্ফূর্ততা। পরিণত হচ্ছে যন্ত্রমানবে। শারীরিক ও মানসিক বিকাশের এই সময়টায় তাকে তীব্র মানসিক চাপ সামলাতে হচ্ছে। এই সন্তানকে যদি বিকেলে খানিকটা খেলাধুলা করতে দেন, দেখা যাবে সব চাপ সে সামলে নিচ্ছে। তা না হলে নিজের মধ্যকার মানবিক সত্তার সঙ্গে লড়তে লড়তে তার মধ্যে তৈরি হয় দ্বন্দ্ব। তার মধ্যে জন্ম নিতে পারে হতাশা, আগ্রাসী আচরণ, শিক্ষার প্রতি বিরাগ ও ব্যক্তিত্বের সমস্যা। এ জন্য অভিভাবককে, বিশেষ করে মাকে হতে হবে সচেতন। সন্তানের ভালো-মন্দ মা-ই সবার আগে বুঝতে পারেন।
যুগটা সত্যিই প্রতিযোগিতার, শিশুদের অবশ্যই পরীক্ষায় ভালো ফল করতে হবে, তবে তা যেন তার শৈশবের বিনিময়ে না হয়। তাদের শৈশব-কৈশোর যেন ক্লান্ত-ম্রিয়মাণ হয়ে না ওঠে। প্রতিদিন বিকেলে অন্তত আধা ঘণ্টা হলেও শিশুকে খেলতে দিন। এতে ওর শারীরিক বিকাশ তো হবেই, মানসিক বিকাশও হবে। অন্য শিশুদের সঙ্গে খেললে তার সামাজিক সম্পৃক্ততা বাড়বে। আত্মকেন্দ্রিক হয় না এসব শিশু। আশপাশে অন্য কোনো শিশু না থাকলে মা-ও খেলতে পারেন শিশুর সঙ্গে। এতে মায়ের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হবে।
একেক শিশু একেক খেলার প্রতি আগ্রহী হয়। কোনো শিশু যদি ফুটবলের প্রতি আগ্রহী হয়, তাঁকে ফুটবল খেলার কোচিংয়ে ভর্তি করতে পারেন। কেউ শারীরিক কসরত শিখতে চাইলে তাকে শেখাতে পারেন। মা-বাবার স্বপ্ন সন্তানের ওপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। কেননা, শারীরিক কসরত শিখলে নিজেকে আত্মরক্ষা করতে পারবে। শিশু আত্মবিশ্বাসী হবে। দেখবেন, যেসব শিশু খেলাধুলা করে, তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা অন্য শিশুদের চেয়ে বেশি হয়। তার চাওয়াকে যেমন গুরুত্ব দেওয়া হলো, আবার তাকে উচ্ছল রাখতেও সাহায্য করবে এটি। তবে সন্তানকে বলতে হবে, তার কথা আপনারা শুনছেন, ফলে মা-বাবার কথাও তাকে শুনতে হবে।