এইতো সেদিনের কথা, ২৩ই আগস্ট,২০১৫। বেইজিং এ অনুষ্ঠিত বিশ্ব এ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে দৌড়াচ্ছেন গতিদানব উসাইন বোল্ট, পাল্লা দিচ্ছেন অন্য বড় বড় সব মহারথীদের সাথে। গ্যালারিতে বসে থাকা হাজারো দর্শক এবং টিভি পর্দার সামনের দর্শক দেখলো ১০০ মিটার ডিসিপ্লিনে জাস্টিন গ্যাটলিন এবং উসাইন বোল্ট একই সময়ে ফিনিশিং লাইন অতিক্রম করেন। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে মাঠে থাকা বড় পর্দায় দেখা গেলো উসাইন বোল্ট চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমাদের খালি চোখে খেলার সময়ে এ্যাথলেটদের যে ন্যুনতম মুভমেন্ট আমরা ধরতে পারি না, সেগুলো পর্যবেক্ষনের জন্যে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, তাকে Photo Finish Technology বলা হয়।
এই প্রযুক্তিতে ফিনিশিং লাইনের কাছে উঁচু স্থানে একটি ক্যামেরা স্থাপন করা থাকে। এই ক্যামেরার মাধ্যমে ফিনিশিং লাইন বরাবার একটানা দ্বিমাত্রিক ছবি তোলা হয়। এতে করে প্রত্যেক প্রতিযোগীর প্রতিটি মুভমেন্ট বিশ্লেষণ করা যায়।
যেকোনো ক্যামেরা দিয়েই খেলার মুহূর্ত ধারণ করা যায়, তবে সময়ের একটি ব্যাপার আছে এখানে। বর্তমানে যে ক্যামেরাগুলো ব্যবহার করা হয় সেগুলো ০.৫ সেকেন্ডেরও কম সময়ে ফলাফল দেখিয়ে দিতে পারে। এই ক্যামেরাগুলো এতই অত্যাধুনিক যে প্রতি সেকেন্ডে ২০০০টি ছবি তুলতে সক্ষম ! এর ফলে প্রথম বা দ্বিতীয় বিচারে কোনোভাবেই ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে না।
১৯৯৫ সালের ১৫ই জুলাই রেসিং জগতের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। মাত্র ০.০০১ সেকেন্ডের ব্যবধানে মাইক স্কিনারকে পরাজিত করে Total Petroliam 200 শিরোপা নিয়েছিলো বুচ মিলার। আর এই সূক্ষ্ম সময়ের হিসাব ফটো ফিনিশিং প্রযুক্তির ব্যবহারেই সম্ভব হয়েছে।
১৯১২ সালের সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠিত গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের ১৫০০ মিটার ইভেন্টে সর্বপ্রথম এই ফটো ফিনিশ টেকনোলোজির ব্যবহার হয়।
শুধু দৌড় প্রতিযোগিতায় নয়, ট্রাইথালন, ঘোড়দৌড়, কার রেসিং এসব খেলাতেও এই ফটো ফিনিশিং প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে বর্তমানে।