ভিনদেশের ঈদ

দুদিন পরই মুসলিম ধর্মালম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আযহা। এই আনন্দ উৎসবের জন্য অপেক্ষায় আছে সারা বিশ্বের মুসলিম শিশু-কিশোররা। তোমাদের মতো ঈদের আনন্দ ছুঁয়ে যায় তাদেরও। আমাদের দেশে তুমি ঈদ-উল-আযহা কিভাবে পালিত হয় তা তো তুমি জানোই। কিন্তু পৃথিবীর অন্য দেশগুলোতেও কি একইভাবে ঈদ উদযাপিত হয়? তবে তার আগে চলো জেনে নেই ঈদ-উল-আযহা যেমন আমাদের এখানে কুরবানীর ঈদ নামে পরিচিত তেমনি বিশ্বের নানা দেশ ঈদ-উল-আযহাকে কী নামে ডাকা হয়-
০ মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিশিয়াতে এই ঈদ-উল-আযহাকে বলা হয় ‘ঈদ-উল কিবির’
০ আফ্রিকার অনেক স্থানে এ উৎসবকে ডাকা হয় ‘তাবাসকি’ বা ‘তোবাসকি’ নামে।  
০ পূর্ব আফ্রিকায় এর পরিচিতি ‘বাব্বারার সালাহ’ নামে।
০ সোমালিয়া, কেনিয়া এবং ইথিওপিয়ায় বলা হয় ‘সিডওয়েনি’।
০ তুরস্কে বলা হয় ‘কোরবান বেরাসি’। এর অর্থ ত্যাগের উৎসব।
০ ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং পাকিস্তানে এই ঈদ ‘বকরি ঈদ’ নামে পরিচিত।
০ মালয়েশিয়ায় বলা হয় ‘আইদিল আদহা’।
বিশ্বের সব দেশের ঈদ উদযাপন রীতি প্রায় একইরকম। কারণ ঈদুল আযহা ধর্মীয় উৎসব। যা উদযাপনের রীতি-নীতি ইসলাম ধর্মীয় শাস্ত্রমতে পূর্বনির্ধারিত। এজন্য প্রায় প্রতিটি মুসলিম দেশের ঈদ উদযাপনের ধরন ও রীতি একইরকম। তবে কিছু দেশে স্থানীয় সংষ্কৃতি ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে ঈদুল আযহা উদযাপনের রীতিটা কিছুটা ভিন্ন। চলাে জেনে নেয়া যাক সেসব দেশের কথা-
চীন
চীনে মোট জনসংখ্যার মাত্র ১৬% মুসলমান। এদেশে বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত সংখ্যালঘু মুসলমানরা বিভিন্ন এলাকায় বাস করেন। চীনের মুসলমানরা যেখানেই কাজ করুক না কেন দুই ঈদেই তারা বাড়িতে আসেন এবং সবাই একত্রে ঈদ উদযাপন করেন। ঈদ-উল আজহার মতো ঈদ-উল ফিতরও তারা তিন দিনব্যাপী উদ্যাপন করেন। ঈদে নারী-পুরুষ সবাই আমাদের মতো নতুন জামা-কাপড় পরে। এখানে ঈদের নামাযের আগে সাইরেন বাজিয়ে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে তারা আমাদের মতো নিজেদের বাড়িতে কোরবানি না করে চীনের মুসলমানেরা সবাই একটি নিদির্ষ্ট জায়গায় কোরবানি করেন। ঈদ উপলক্ষে চীনের মুসলমানদের মধ্যে গণবিবাহের আয়োজনও করা হয়ে থাকে।
সুদান
সুদানের অধিবাসিরা কোরবানির ঈদে প্রধানত উট ও গরু কোরবানি করে থাকেন। সুদানে ঈদ উপলক্ষে সরকারি এবং স্থানীয় উদ্যোগে ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এটি সুদানের অধিবাসিদের জন্য ঈদে বাড়তি আনন্দের মাত্রা যোগ করে। তাছাড়া সেখানকার আদিবাসিরা এদিন তাদের ঐতিহ্যবাহী নাচের আয়োজনও করে। শিশুরা বর্ণিল পোশাক পড়ে ঘুরে বেড়ায়।
নাইজেরিয়া
নাইজেরিয়াতে সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদ উল আযহা। দিনটি উপলক্ষে তারা গরীব এবং অসুস্থ মুসলমানদের সাহায্য করে। এটা তাদের একটি সামাজিক প্রথাও। এখানে কোরবানির মাংস ও নতুন কাপড় গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হয়। এদিন ছোট ছেলেমেয়েরা ঈদ উপলক্ষে বড়দের কাছ থেকে উপহার পায়। এটা ছাড়াও তারা একে অপরকে ঈদ কার্ড দিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা জানায়।
দুবাই
ঈদ উপলক্ষে পুরো দুবাইকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। এখানের শিশুরাও আমাদের মতো নতুন পোশাক পরে ও ঈদ উপলক্ষে সালামি পায় বড়দের কাছ থেকে। তবে এদেশে কোরবানির ঈদ উদযাপিত হয় চারদিনব্যাপি। সামর্থ্যবান মুসলমানেরা কোরবানি করেন ও মাংস গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দেন। দুবাইয়ে অতিথিদের তাদের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি ও ফল দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। এছাড়াও নানারকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ঈদ উপলক্ষে। ঈদ উপলক্ষে দুবাইয়ের এয়ারপোর্টগুলোতে যাত্রীদেরকেও ঐতিহ্যবাহি কফি ও মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।

 

 

 

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন