মঙ্গলগ্রহ যখন একটি কমবয়সী গ্রহ ছিল তখন এর এক-পঞ্চমাংশ ছিল সমুদ্রের নীচে, নাসার বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন।
এই লাল গ্রহে মানুষের বসবাসের ব্যাপারে এই তথ্য নতুন দ্বার উন্মোচন করতে পারে বলে ধারণা করছেন সবাই।
মঙ্গলের সমুদ্র ভূমধ্যসাগরের মতই গভীর ছিল আর এই সাগরে যে পরিমাণ পানি ছিল তা পুরো গ্রহ ঢেকে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।
নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন মঙ্গলের ২০ শতাংশ একদা পানির নিচে ছিল। কোন কোন জায়গায় এই সমুদ্রের গভীরতা ছিল ১ মাইলেরও বেশি।
নাসার আর্জেন্টাইন বিজ্ঞানী গরেনিমো ভিয়ানুয়েমো, যিনি এই গবেষণার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, বলেন ‘আমাদের গবেষণা থেকে মঙ্গলে ঠিক কত পরিমাণ পানি ছিল তা সঠিকভাবে জানা যাবে’।
তিনি আরও বলেন এই পানির ৮৭ শতাংশ মহাকাশে বিলীন হয়ে গিয়েছে। এই কাজের মাধ্যমে আমরা মঙ্গলের পানির অনেক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবো।
যেহেতু মঙ্গলে একটি বিশাল পরিমাণ পানি ছিল তাতে মঙ্গলে পানির স্থায়িত্বকাল নিয়ে আমাদের আগে যে ধারণা ছিল সেখানে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। আমরা ধারণা করছি মঙ্গলে আরও বেশি সময় ধরে পানির উপস্থিতি ছিল। এতে এই গ্রহে আমাদের বসবাসের সম্ভাবনা আরও দৃঢ় হয়েছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী তিনটি টেলিস্কোপ ব্যবহার করে নাসার বিজ্ঞানীরা মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে ভিন্ন গঠনের ২ ধরণের পানির সন্ধান পেয়েছেন। একটি হচ্ছে আমাদের পরিচিত H2O যেখানে ২টি হাইড্রোজেন পরমাণু একটি অক্সিজেন পরমাণুর সাথে যুক্ত হয়েছে।
আরেকটি হচ্ছে HDO যেখানে পানির একটি হাইড্রোজেন পরমাণু এর একটি ভারী রূপ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে। একে বলা হয় ডিউটেরিয়াম।
পানির এই দুইটি রূপ সম্পর্কে গবেষণা করে ঠিক কি পরিমাণ পানি মহাকাশে হারিয়ে গিয়েছে তা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
২০৩০ সালের মধ্যে বসবাসের জন্য এই গ্রহে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে নাসা।