যদিও বা হরতালে স্কুল-কলেজ নামেমাত্র খোলা থাকছে, তারপরও আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে বিপদের ভয় নিয়ে রাস্তায় বের হওয়াটাই তো সবচেয়ে দুশ্চিন্তার। ইদানীংকালে শুরু হওয়া পেট্রোল বোমা আর বাস পোড়ানোর এই ভয়াবহ সব ঘটনার মধ্যে আর সাহস হয় না বাসে চড়ার।
গ্রীণরোড থেকে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত তাই এখন রিক্সায়ই যেতে হচ্ছে এই কয়দিন ধরে। তাও ভেঙে ভেঙে রিক্সা পাল্টে যেতে হয়। এভাবে স্কুলে উপস্থিত হতে পারলেও সব সময়ই একটা আতঙ্ক কাজ করে, কখন কি হয়ে যায় সেটা ভেবে! স্কুল যদিওবা খোলা থাকছে, কিন্তু সবার পক্ষেতো আর প্রতিদিন এভাবে আসা-যাওয়া করা সম্ভব নয়।
আমরা বড়রাই যেখানে আতঙ্কিত সর্বক্ষণ সেখানে বাচ্চাদের কথা বলাই বাহুল্য। তারাও ভয় পাচ্ছে আমাদের দুশ্চিন্তা দেখে, টিভিতে বা সংবাদপত্রে জ্বালাও-পোড়াওয়ের ঘটনা দেখে তারাও শঙ্কিত। পরীক্ষা বা ক্লাসটেস্টগুলো ঠিকঠাক মতো দিতে পারছে না। যেদিন অবরোধের পাশাপাশি হরতাল থাকে সেদিন আর সাহস করি না বাচ্চাকে নিয়ে কোচিং বা স্যারের কাছে পড়তে যেতে।
আমাদের দেশের শিক্ষাব্যাবস্থার যে অবস্থা তাতে কোচিং বা স্যারদের পড়ানোও তো স্কুলের ক্লাসের চেয়ে কিছু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। অথচ সেখানেও অনিয়মিত হয়ে যাওয়ায় পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে অনেক। এভাবে চললে তাদের সিলেবাস শেষ হওয়া নিয়েই অনিশ্চয়তা থেকে যাচ্ছে।
পড়াশোনা ছাড়াও, সাঁতার শিখতে নিয়ে যাবো বা কারাতে শেখার ক্লাসে, সেখানেও তো একই ব্যাপার। সবসময় তাই বাচ্চাদের বাসায় বসে থাকতে হচ্ছে শংকিত হয়ে। খেলতে যেতে বা যে কোন কারণে বাইরে যেতে দিচ্ছি না আর এখনকার এই অস্থিরতায়। তাতে করে তারা আরো বেশি খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে সারাক্ষণ ঘরে থাকতে থাকতে। এরকম দমবন্ধ পরিবেশ তো তাদের মন-মেজাজের উপরেও বিরুপ প্রভাব ফেলছে।
ফৌজিয়া আহমেদ
অভিভাবক, রেসিডেনশিয়াল স্কুল এণ্ড কলেজ