ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার। সরকারি ও বেসরকারি নানা উদ্যোগে ডিজিটালাইজেশন বা আধুনিকায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিটি খাত। আর এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাও। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন উদ্যোগ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা আধুনিকতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এতে করে আমাদের শিক্ষার মান যেমন বাড়ছে তেমনি শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ ও আনন্দদায়ক হয়ে উঠছে পড়াশোনার বিষয়টি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার ব্যাপারটিও তাদের জন্য সহজ হচ্ছে এর ফলে।
দেশে যে কয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের মধ্যে আধুনিক শিক্ষা প্রদানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে তার মধ্যে চেরি ব্লোসমস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অন্যতম। রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত এই স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি তার স্বকীয় শিক্ষা পদ্ধতি ও আধুনিকতার কারণে ইতোমধ্যেই অভিভাবক মহলে ভূয়সী প্রশংসা কুড়াতে সক্ষম হয়েছে। অত্যন্ত দক্ষ ও আধুনিক ৩০ জনের বেশি শিক্ষক বর্তমানে শিক্ষা দিয়ে আসছেন তিনশোর বেশি শিক্ষার্থীকে। আর তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্কুলটির প্রিন্সিপাল ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডঃ সালেহা কাদের। সম্প্রতি এই গুণী শিক্ষক বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক ও যুগোপযোগী করে তোলার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছে চ্যাম্পসটোয়েন্টিওয়ান ডটকমের সাথে। সেই সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হচ্ছে এখানে।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে গতিশীল ও যুগোপযোগী করার জন্য ডিজিটালাইজেশন বা আধুনিকায়নের প্রয়োজন কতটুকু?
ড. সালেহাঃ আমার মতে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তা শতভাগ। পড়াশোনার মানোন্নয়নের জন্য বর্তমানে যুগে এর বিকল্প নেই।
এক্ষেত্রে ক্লাসটিউন কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে?
ড. সালেহাঃ আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে ক্লাসটিউন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এটি এমন একটি স্কুল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার যেটির মাধ্যমে এখন আমাদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী আর অভিভাবকদের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি হয়েছে। সবার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা সম্ভব হচ্ছে। সবাই স্কুলের যেকোনো ব্যাপারে নিয়মিত আপডেট পাচ্ছে। মাসিক অভিভাবক সভাগুলো এখন প্রতিদিনকার সভায় রূপ নিয়েছে।
ডিজিটালাইজেশনের দিক থেকে চিন্তা করলে চেরি ব্লোসমস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল কতটা ডিজিটাল?
ড. সালেহাঃ যদিও আধুনিকতার দিক থেকে চেরি ব্লোসমস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অনেকটাই এগিয়ে কিন্তু তারপরও আমার মনে হয় আমরা মাত্র ৬০ শতাংশ আধুনিকতা অর্জন করতে পেরেছি। আমার মনে হয় আমাদের আরও অনেক পথ এখনো যেতে হবে। শুধু আমরাই নয়, দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেই আরও বেশি আধুনিক করে গড়ে তুলতে হবে।
আরও বেশি আধুনিক কিভাবে করা যেতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
ড. সালেহাঃ প্রথমত আমি মনে করি পড়াশোনার বিষয়টি নিয়ে কোন বাচ্চাকেই চাপ দেয়া উচিত না। পড়াশোনা ব্যাপারটিকে তাদের কাছে এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে যেন তারা এটিকে আনন্দদায়ক একটি বিষয় বলে মনে করে। আনন্দ দেয়ার মাধ্যমে শিক্ষাদান করলেই বাচ্চাদের কাছে সেটি সহজ মনে হবে। আর আধুনিক যুগে এর অনেক পদ্ধতি আমাদের সামনে রয়েছে। যেকোনো বিষয়কেই আমাদের ব্যবহারিকভাবে শিক্ষা দেয়া উচিত। যেমন সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় কি এটা একটা বাচ্চাকে বই পড়ে বোঝালে সে যতটুকু বুঝবে একটা ছবি বা ভিডিও দেখালে সেটা তার বুঝতে আরও অনেক বেশি সহজ হবে। আবার ভূমিকম্পের সময় আমাদের কি করণীয় সেগুলো যদি আমরা ব্যবহারিকভাবে বা প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে শেখাতে পারি তাহলে সেটা আরও বেশি কার্যকরী হবে। ক্লাসরুমে প্রোজেক্টর ব্যবহার করে আমরা এগুলো দেখাতে পারি। এছাড়া অনেক সময় অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে উপস্থিত হতে পারে না। তাদের জন্য এ লেকচারগুলো যদি বাসায় বসে করার কোন উপায় বের করা যায় তাহলে খুব ভালো হবে।
স্কুলের সাথে সাথে শিক্ষকদেরকেও আধুনিক হতে হবে… এ ব্যাপারে আপনি কি মনে করেন?
ড. সালেহাঃ আমি মনে করি এটা অবশ্যই প্রয়োজন আছে। যদিও এখন বেশীরভাগ শিক্ষকই কমবেশি আধুনিক কিন্তু সেটা আরও বেশি হওয়া প্রয়োজন। আমাদের স্কুলে প্রত্যেক শিক্ষকেরই ল্যাপটপ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে একটা আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব। এগুলোর মাধ্যমে সবাই ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত থাকতে পারছে। কিন্তু আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যেন আমরা এই আধুনিকতা থেকে আমরা উপকার বের করে নিয়ে আসতে পারি।
সেই সাথে শিক্ষকদের উচিত নিজেদের উন্নয়ন করা। নিজেদের জ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করা। তাদেরকে বাহ্যিক ঘটনাবলী সম্পর্কে অবহিত থাকতে হবে এবং পড়াশোনার পাশাপাশি এসব জ্ঞানার্জনে বাচ্চাদের সাহায্যও করতে হবে।
আপনার সম্প্রতি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন সম্পর্কে কিছু বলুন।
ড. সালেহাঃ আমার পিএইচডি’র শিরোনাম ছিল ‘চ্যালেঞ্জস অ্যান্ড প্রসপেক্টস অফ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ইন বাংলাদেশ’। আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করার লক্ষ্য নিয়েই এখন এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা।