সাদা হাতের গিবন দেখতে ছোটখাটো, লেজবিহীন। এদের শরীর পুরু নরম লােমে ঢাকা। এরা গাছে থাকে। অনেক উঁচুতে পাতার আচ্ছাদনে থাকতেই পছন্দ করে। বড় বড় হাতের কারণে এরা খুব সহজেই এক গাছের ডাল থেকে অন্য গাছের ডালে লাফিয়ে লাফিয়ে যেতে পারে।
শুধু তাই নয়, সাদা হাতের গিবনরা খুব দ্রুততার সাথে দিক পরিবর্তন করেতে পারে, শূন্য থেকে পাখি ধরতে পারে মাটিতে নামার পর সেগুলোকে খায় তারা। সবচাইতে দ্রুতগামী প্রাইমেটদের মধ্যে এরা অন্যতম। উল্লেখ্য প্রাইমেট হচ্ছে উচ্চশ্রেণীর স্তন্যপায়ী প্রাণী।
সাদা হাতের গিবনদের দেখা মেলে থাইল্যাণ্ড, ইন্দোনেিশয়া মালয়শিয়া, লাওস এবং মিয়ানমারের অরণ্যে। তবে নির্বিচারে বন উজাড় ও চোরা শিকারীদের দৌরােত্মে ক্রমশ এদের সংখ্যা কমে আসছে।
এই গিবনেরা এতোটাই দ্রুত যে এক ডাল থেকে আরেক ডালে যাওয়ার সময় বলা চলে এরা প্রায় ডাল স্পর্শই করেনা।
এভাবে অনেকটা উড়ে উড়েই প্রায় ৪০ ফিট পর্যন্ত যেতে পারে এই ছোট্ট গিবনেরা। অনেক সময় বনে মধ্যে থাকা নদী বা বড় খোলা জায়গাও এরকম অ্যাক্রোবেটিক টেকনিকের দ্বারা পার হয়ে যায় এরা। তবে মাঝে মধ্যে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে হাড় ভাঙার মত ঘটনাও ঘটে এদের ক্ষেত্রে।
এই গিবনেরা গাছের উপরেই ঘুমায়। ঘুমানোর সময় এরা মুখ এদের হাঁটু আর বুকের মাঝে লুকিয়ে রাখে। এরা সাধারণত দুই পায়ে ভর দিয়ে চলে এবং এক গাছ থেকে আরেক গাছে যাওয়ার সময়ও এরা দুই পায়ে ভর দিয়ে দুই হাতে গাছ ধরে ধরে যায়।
এই 'সাদা-হাতি' গিবনদের দুই হাত এবং দুই পায়ের উপরের অংশ সাদা পশমে ঢাকা থাকে। এ কারণেই এদের ‘সাদা-হাতি’ বলা হয়। এরা সপরিবারে বসবাস করে। এদের ছোট ছোট পরিবারে সাধারণত একজন পুরুষ, একজন নারী এবং এদের বাচ্চাকাচ্চারা থাকে। বাচ্চা সাদা-হাতি গিবন সম্পূর্ণ সাদা অবস্থায় জন্ম নেয়।
জন্মের ২ থেকে ৪ বছরের মধ্যে এরা পরিপূর্ণ রং ধারণ করে।
সাদা-হাতি গিবনদের অনেক সময় মাংসের জন্য শিকার করা হয়। থাইল্যান্ডসহ অনেক দেশে বাচ্চা সাদা-হাতি গিবনের চাহিদা রয়েছে পোষা প্রাণী হিসেবে।