নেদারল্যান্ডের রাজধানী অ্যামস্টারডামে অবস্থিত রাইখস মিউজিয়ামে সেলফি তোলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর বদলে দর্শনার্থীদের সনাতন উপায়ে ছবি আঁকাকে উৎসাহিত করছেন জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। বিশ্বের অন্যান্য জাদুঘরগুলোও এরকম সিদ্ধান্ত নেবার কথা এখন চিন্তাভাবনা করছে।
মানুষের কাছে তার আনন্দময় মুহূর্তগুলো ধরে রাখার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে ছবি তোলা। তাই ঘুরতে গেলেই মানুষ সাধারণত ছবি তলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু এ ধরণের কাজকে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করছেন জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।
রাইখস মিউজিয়াম প্রতি শনিবারকে ‘ড্রয়িং স্যাটারডে’ নাম দিয়েছে। এ দিন দর্শনার্থীদেরকে কোন ছবি তুলতে দেয়া হয় না, তবে তাদেরকে ছবি আঁকতে সুযোগ দেয়া হয়। সেই সাথে টিকেটের সঙ্গে একটি স্কেচবুক ও পেন্সিল ফ্রি দেয়া হয়। জাদুঘরটির ওয়েবসাইট এর ব্যাখ্যায় বলছে, মানুষ যখন ছবি আঁকে তখন বস্তুটিকে অনেক নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করে।
টাইম ম্যাগাজিন তালিকায় ২০১৪ সালের সেরা ২৫ আবিষ্কারের মধ্যে রয়েছে সেলফি স্টিক। মানুষ এখন শুধু নিজের নয়, পেছনে আকর্ষণীয় ব্যাকগ্রাউন্ড রেখে ছবি তুলছে সেলফি স্টিক দিয়ে আর সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করছে।
কিন্তু জাদুঘর এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এই সেলফি স্টিক বিরক্তির উদ্রেককারী। ডিজনি তাদের থিম পার্কে এই স্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। অনেক চার্চেও এটি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
নিরাপত্তার জন্যও সেলফি স্টিক ব্যবহার ঠিক নয়। ভ্যাটিকানের সিস্টিন চ্যাপেল, ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান, নিউইয়র্কের মিউজিয়াম অফ মডার্ন আর্ট বা প্যালেস অফ ভার্সাই- এসব জায়গাতে আর সেলফি স্টিক ব্যবহার করা যায় না।
সেলফি স্টিক ব্যবহার করতে গেলে মূল্যবান প্রদর্শনী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, অন্য কেউ আহত হতে পারে। সেলফি স্টিক ব্যবহারের মানে হচ্ছে আরেকজনের জায়গায় হস্তক্ষেপ করা।
ভ্যাটিকান মিউজিয়ামে এমনকি ফ্ল্যাশ দিয়েও ছবি তোলা নিষেধ। সেখানে প্রবেশের আগে সেলফি স্টিক এবং ব্যাগপ্যাক একটি লকারে রেখে যেতে হয়।
বড় বড় খেলাধূলার ক্ষেত্রে যেমন উইম্বল্ডন টেনিসের মাঠে ছুরি, পিপার স্প্রে বা অন্য কোন বেআইনি সামগ্রির মত সেলফি স্টিক নিয়েও প্রবেশ করা যায় না।
তবে লন্ডন বা প্যারিসের যে কোনো জাদুঘরে এখনও সেলফি স্টিক ব্যবহার করা যায়।