‘২০১২’ বা এরকম হলিউডের অনেক সিনেমাতেই আমরা দেখিছি কয়েকশ ফুট উচ্চতার বিশাল বিশাল ঢেউ এসে সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে। তবে এমন দৃশ্য আমরা বাস্তবে কখনো কল্পনাও করতে পারি না। কিন্তু সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জেনেছেন এমন সব মেগাসুনামি একসময় ঘটেছে পৃথিবীতে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রায় ৭৩ হাজার বছর আগে আফ্রিকার উপকূলে অবস্থিত কেপ ভার্দে দ্বীপের ফোগো নামক আগ্নেয়গিরির গা থেকে বিশাল একটা অংশ সমুদ্রে খসে পড়ায় বিশাল এক সুনামির সৃষ্টি হয়। এই সুনামি এতোটাই শক্তিশালী ছিল যে ছোটখাটো একটা পাহাড়কেও সরিয়ে ফেলার ক্ষমতা ছিল এটির।
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা ফোগো আগ্নেয়গিরির কাছে বহুবছর আগে হওয়া বিশাল একটা ভূমিধ্বসের চিহ্ন খুঁজে পেয়েছেন। তারা ধারণা করছেন ৩০ মাইল দূর পর্যন্ত এই সুনামির প্রভাব পড়েছিল।
কিন্তু কীভাবে বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে এতো নিশ্চিত হলেন। এ ব্যাপারে এই গবেষকদলের প্রধান রিকার্ডো রামালহো বলেন, তিনি ২০০৭ সালে সান্তিয়াগোতে একটি বিশাল আকৃতির পাথরের সন্ধান পান। পাথরটি একটি মালভূমির উপরের অংশে ছিল। কিন্তু পাথর খণ্ডটির বৈশিষ্ট্য দেখে মনে হচ্ছে এটি মালভূমির নিচের একটা অংশ ছিল একসময়। শুধু তাই নয়, পাথরটি সামুদ্রিক শিলা দ্বারা গঠিত। অথচ যেখানে এটি পাওয়া গিয়েছে সেখানকার আশেপাশের সব পাথর আগ্নেয় শিলা দ্বারা গঠিত।
সুতরাং তারা ধরেই নিয়েছেন পাথরটি তার মূল অবস্থান থেকে কমপক্ষে ৮০০ ফুট উপরে উঠে এসেছে। আর একমাত্র মেগাসুনামির পক্ষেই এমনটা ঘটানো সম্ভব।
৭০০ টন ওজনের এই পাথর খণ্ডটির পৃষ্ঠ থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, পাথরটি ফোগো আগ্নেয়গিরির ধ্বসের সময়কার পাথর। সেই সাথে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুতে সামুদ্রিক প্রাণীদের ফসিল পাওয়াও বিশাল এক মেগাসুনামির ঘটনা প্রমাণ করে।
তবে এরকম মেগাসুনামি আবার ঘটবে কিনা জানতে চাইলে রামালহো বলেন, আসলে একটা বিশাল বিপর্যয় ঘটার কারণেই এই মেগাসুনামির উৎপত্তি হয়েছিলো। যদিও বিভিন্ন কারণে ছোট ছোট সুনামি সৃষ্টি হয় কিন্তু বড়সড় কোন বিপর্যয় ছাড়া এরকম মেগাসুনামি হবার সম্ভাবনা খুবই কম।