ব্যবসায়িক ভ্রমণ মূলত ব্যস্ততাপূর্ণ ও চাহিদাসম্পন্ন হয়ে থাকে, তাই বলে এটিকে ভয়ের মনে করলে চলবে না। ছোট্ট পরিকল্পনা আর চেকলিস্ট মেনে চললেই আপনার ব্যবসায়িক ভ্রমণ হয়ে উঠতে পারে আনন্দময়। চলুন ব্যবসায়িক ভ্রমণের জন্য বাস্তবিক ৭ টিপস জেনে নিই।
১. সকল ডিভাইসে চার্জ রাখুন
ভ্রমণে থাকাকালীন ফোনটি হাতে নিয়ে দেখলেন চার্জ নেই, এর থেকে বিরক্তিকর ও ভোগান্তির কিছু হতে পারে না। আর তখন যদি হাতের কাছে চার্জার না থাকে তাহলেতো সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। ব্যাটারির চার্জ কম থাকা অনেক ব্যবসায়িক ভ্রমণকারীদের ক্ষেত্রে ঘটে থাকে। এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে না চাইলে ভ্রমণ শুরুর আগেই সকল ডিভাইস যেমন মোবাইল, ল্যাপটপ, পাওয়ার ব্যাংক, স্মার্ট ওয়াচ ইত্যাদি ভালোভাবে চার্জ পূর্ণ করে নিন। একইসাথে যেখানে যাচ্ছেন সেখানকার উপযোগি সব ডিভাইসের চার্জার বা অ্যাডাপ্টর নিয়ে যাবেন। আগে থেকেই পাওয়ার সকেট, ভোল্টেজ সম্পর্কে জেনে নিবেন।
২. শুষ্ক পরিস্কার প্লাস্টিকের ভিতর পোশাক রাখুন
যেসব ব্যবসায়িক ভ্রমণকারীদের কাপড় ইস্ত্রি করার সময় থাকবে না এই টিপসটি তাদের জন্য সবচেয়ে উপযোগি। ব্যস্ততার কারণে ভ্রমণে বেশিরভাগ সময়েই কাপড় ইস্ত্রি করা সম্ভব হয় না। তাই ভ্রমণের আগে পোশাকগুলো পরিস্কার ও শুষ্ক প্লাস্টিকের ভিতরে ভরে নিলে এই ভোগান্তি থেকে রেহাই পাওয়া যায়। শুধু ভাঁজ হওয়া থেকে রক্ষা নয়, এর মাধ্যমে পোশাকগুলো অপ্রত্যাশিত ময়লা ও ঘর্ষণ থেকে রেহাই পায়।
৩. অ্যাপস ব্যবহার করুন
বর্তমানের জীবনযাত্রা ও পেশাদারিত্বের জায়গা অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে বিভিন্ন ধরণের মোবাইল অ্যাপস। যাতায়াত, হোটেল বুকিং, যোগাযোগ, ইন্টারন্যাশনাল বা লোকাল পেমেন্ট, প্রোডাক্টিভিটি, অ্যাক্টিভিটি, ম্যাপস ইত্যাদি নানা ধরণের অ্যাপস রয়েছে। তাই ভ্রমণের আগে ও ভ্রমণকালীন সময়ে উপযোগি এসব অ্যাপস ব্যবহার করতে ভুলবেন না। এতে আপনার সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে, ভোগান্তি কমে যাবে।
৪. যথাযথ ব্যায়াম ও ডায়েট
যেহেতু ব্যবসায়িক ভ্রমণকারীদের ‘টাইট শিডিউল’ থাকে তাই সবসময় যথাযথ ডায়েট ও ব্যায়াম করার বিষয়টি চেকলিস্টে থাকে না। কিন্তু এই দুটি বিষয় চেকলিস্টে থাকা জরুরী। এটি ভ্রমণকালীন সময়ে শারীরিকভাবে যেমন উপকারী, তেমনই সুস্থ থাকতে সহায়তা করে। ব্যস্ত থাকবেন তারমানে এই নয় যে আপনি ডায়েট ও নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারবেন না। যখন ব্যবসায়িক ভ্রমণে যাবেন তখন অবশ্যই আপনার সুস্থ থাকার বিষয়টি মাথায় রাখবেন। লোভনীয় অনেক খাবার পাবেন, তবে সেটা যেনো পরিমিতভাবে খান সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
৫. ভ্রমণ মজার করুন
ব্যবসা এবং মজা করার মধ্যেই ব্যবসায় ভ্রমণের স্বার্থকতা। এ ধরণের ভ্রমণকালীন সময়ে প্রবাসী বন্ধুদের সাথে বসে কফি খাওয়া বা ডিনার করার মধ্যে কোনও ভুল নেই। আপনি যেখানে আছে তার আশেপাশেই পরিচিত কেউ থাকলে তার বাসাতেও সময় করে ঘুরে আসতে পারেন। ব্যস্ততা শেষ করে অবসর সময়ে অন্য কিছু করার মধ্য দিয়েও আপনি ভ্রমণকে আনন্দময় করে তুলতে পারেন।
৬. কমই যথেষ্ট
অনেকেই ভ্রমণের সময় বুঝে-না বুঝে অতিরিক্ত পোশাক ও জিনিষ বহণ করেন। কিন্তু ভ্রমণের আগে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হলো আপনার কী প্রয়োজন সেটি জানা। কথায় আছে, কমই যথেষ্ট। তাই প্রয়োজন বুঝে যতোটা সম্ভব কম প্যাক করা উচিত। দেখবেন যা নিয়েছেন তার অর্ধেকও ব্যবহারের বাইরে রয়েছে। তাই অহেতুক বোঝা বাড়াবেন না।
৭. মানানসই এবং সুন্দর পোশাক পরিধান করুন
ব্যস্ত থাকার মানে এই নয় যে আপনাকে যা ইচ্ছা তাই দেখা যাক। ভ্রমণের সময় অবশ্যই আপনার কাজের চাপ চেহারায় ফুটে উঠানো ঠিক নয়। যখন আপনি ব্যবসায়িক ভ্রমণে যাবেন তখন অবশ্যই সুন্দর ও মানানসই পোশাক পরিধান করবেন। ফরমাল মিটিংয়ে গেলে অবশ্যই ফরমাল পোশাক পরা উচিত। আপনি যখন বাসা থেকে এয়ারপোর্ট ও অবশেষে আপনার গন্তব্যের হোটেলে যাবেন তখন আরামদায়ক পোশাক পরবেন, তবে মনে রাখবেন সেটা যেনো অবশ্যই মানানসই হয়।