শিশু বয়স থেকেই পরিবারের ছোটদের মধ্যে সহবত শিক্ষা দেওয়াটা জরুরি। তা না হলে নির্দিষ্ট বয়সের পর তার আচরণের কারণে যে কোন সময় অস্বস্তিতে পড়তে হতে পারে আপনাকে। এমনকি সাধারণ সহবতের অভাবে শিশুর আচরণে একরোখা ভাবও প্রকাশ পেতে পারে। তখন সে নিজে যা ভালো মনে করে সেটাই করতে চাইবে।
তাই ছোটবেলাতেই যদি আমরা আমাদের বাচ্চাদের মধ্যে সাধারণ রীতি-রেওয়াজগুলোর চর্চা করতে শেখাই তাহলে আর তাদের নিয়ে কোনো ভয় থাকে না। সন্তানদের সাধারণ সহবত বা রীতিনীতি সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ড. মেহজাবিন হক।
ছেলেবেলা থেকেই শিখাই
০ সন্তানকে গুরুজনদের সম্মান করতে শেখান।
০ কারো কাছ থেকে কোন সাহায্য পেলে ধন্যবাদ জানাতে শেখান।
০ মুখে না শিখিয়ে কাজে শেখান। ছোটরা কোনো জিনিস এগিয়ে দিলে বা কথামত কাজ করে রাখলে তাকে ধন্যবাদ বলুন। আবার তার ‘থ্যাঙ্ক ইউ’- এর জবাবে ওয়েলকাম বলতে ভুলবেন না।
০ কথার মাঝে কথা না বলতে শেখান।
০ বড়দের সঙ্গে তর্ক না করা শেখানোটাও কিন্তু খুব জরুরি।
সন্তান যখন অন্য বাড়ি
০ কারো বাড়িতে গেলে জুতো খুলে ঘরে ঢুকতে হয়। এটাও ওকে শিখিয়ে দিন।
০ অতিথি বাড়ি থেকে চলে আসার সময় বিদায় বলতে শেখান।
বাড়িতে অতিথি এলে
০ লাজুক বাচ্চারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘরের দরজা খুলে দিয়ে চলে আসে। এটা ঠিক নয়। বরং বসার ঘরে পাখা চালিয়ে অতিথিকে বসতে বলতে শেখান।
০ অতিথি আপ্যায়নের সময় আপনার সঙ্গে বসে জলখাবার এগিয়ে দিতে শেখান। এতে একদিকে যেমন অতিথি অ্যাপায়ন শিখবে অন্যদিকে বাড়ির ছোট ছোট কাজ শিখবে।
০ তার সর্ম্পকে কোন তথ্য অতিথি জিজ্ঞেস করলে তার কাছ থেকেই জবাব দেয়ার বিষয়টি নিশ্চত করুন। এতে অপরিচিত মানুষের সঙ্গে কথা বলবার জড়তা কেটে যাবে। তবে বিষয়টি নিয়ে কোন জোরাজুরি না করে ধীরেসুস্থে এই অভ্যাসটি গড়ে তুলুন।
০ অতিথি বিদায় নেবার সময় আবার আসতে বলতে শেখান।
খাওয়ার টেবিলে
০ অন্তত একটি বেলার খাবার পরিবারের সবার সঙ্গে টেবিলে বসে খেতে শেখান।
০ আগে বা পরে নয় সবাই খেতে শুরু করলে খাওয়া শুরু করা শেখান।
০ শব্দ করে খেতে বারণ করুন
০ অল্প করে খাবার নিতে বলুন।
০ খাওয়া শেষে আগে উঠে যেতে হলে সবাইকে বলে উঠতে হয় এটা শিখিয়ে দিন।
কাজের লোকের সঙ্গে
০ বাড়ির কাজের লোককে নাম ধরে ডাকা ঠিক নয়। সম্ভাষণে আপনি বা তুমি বলতে শেখান।
০ বাড়িতে কাজের লোক থাকলেই হুটহাট তাকে ফরমায়েশ করা ঠিক নয়। এটা ওকে বুঝিয়ে বলুন।
০ বাইরে বেরিয়ে কিছু কিনে খেলে বা বাড়িতে কোনো খাবার এলে কাজের লোককে দিতে শেখান।
০ কাজের লোকের বিশ্রামের সময় খুব জরুরি না হলে তাকে বিরক্ত না করতে শেখান।
চরিত্র গঠনে
০ ভুল স্বীকার করতে শেখান। এটা শেখানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো সন্তানের সামনে আপনার নিজের ভুল স্বীকার করতে কখনো কুণ্ঠাবোধ করবেন না। ভুল হলে বাচ্চাকে দুঃখিত বলতে পিছপা হবেন না।
০ পড়াশোনা, খেলা বা খাওয়ার পরে নিজের ডেস্ক, টেবিল, বিছানা গুছিয়ে রাখতে শেখান।
০ সহমর্মিতা শেখান। ছোট থেকে অন্যের জন্য ভাবতে শিখলে চারিত্রিক পূর্ণতা সৃষ্টি হয়।
০ মাটিতে পা ঘষে হাঁটতে বারণ করুন। পিঠ সোজা করে হাঁটতে শেখান। পড়ার সময় পা দোলানো বা নাচানোর অভ্যস যেন না হয়। বয়স্কদের সাহায্য করতে শেখান। বসার সময় পা জুড়ে বসার অভ্যস করান। পা ফাঁক বা তুলে বসা অভদ্রতা এটা ওকে জানিয়ে দিন।