অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত প্রবাল প্রাচীর ‘গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ’ ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইটের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইটের ২১ সদস্যের কমিটি এ বছরের শুরু দিকে তাদের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো সম্পর্কে একটি প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়। এতে তারা জানায়, গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের অবস্থা খুব একটা ভালো নয় এবং এর অবস্থা দিন দিন অবনতি হচ্ছে।
জার্মানির বন শহরে অনুষ্ঠিত এই সভায় অস্ট্রেলিয়ার সদস্য মুখপাত্রও উপস্থিত ছিলেন। গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে বিপদাপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে চিহ্নিত করে তাকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ ১৯৮১ সালে ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইটের তালিকাভুক্ত হয়। ব্রিটেন এবং আয়ারল্যান্ডের সম্মিলিত আকারের চেয়েও বড় এটি। এখানে ১৫০০ প্রজাতির মাছ বসবাস করে, ৩০ প্রজাতির সেটাসেন (তিমি-সম্বন্ধীয় বিশেষ একটি স্তন্যপায়ী বর্গভুক্ত প্রাণী), ডুগং (বৃহৎ স্তন্যপায়ী উদ্ভিদভোজী সামুদ্রিক প্রাণীবিশেষ) এবং সামুদ্রিক কচ্ছপ বাস করে। গত ৩ দশকে এখানের অর্ধেক প্রবাল ধ্বংস হয়ে গেছে।
ঘনঘন সাইক্লোন, পানির গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাওয়া, প্রবাল তুলে ফেলা ইত্যাদির কারণে রিফের অবস্থা প্রতিিনয়ত আরও খারাপ হচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে সামুদ্রিক অনেক উদ্ভিদ মারা যাচ্ছে যা রিফের জন্য হুমকিস্বরূপ।
রিফের উন্নয়নের জন্য অস্ট্রেলিয়া ইতোমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। সমুদ্রে পলির পরিমাণ কমানো, বন্দরের বিস্তৃতি রোধ, দূষণ কমানো এবং প্রবালের পাচার ঠেকাতে বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দেশটি। একই সাথে এই কাজের জন্য ২ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার বরাদ্দ এবং একজন ‘গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ মন্ত্রী’ও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আগামী ১৮ মাসের মধ্যে সার্বিক উন্নতি সম্পর্কে রিপোর্ট পেশ করতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে।