সম্প্রতি ফ্রান্সে আবিষ্কৃত হয়েছে এক নতুন প্রযুক্তি। শহরের আশেপাশে বইতে থাকা এলোমেলো বাতাসকে একটা ছোট যন্ত্রের মধ্যে বন্দী করে তা থেকে উৎপন্ন করা হবে বায়ুশক্তি।
জেরোমি মিশুড লেরিভিয়ার একদিন বাগানে বসে ছিলেন। আশেপাশে বাতাস নেই দেখে তিনি হঠাৎ করেই একটা বুদ্ধি বের করে ফেললেন।
চারিদিকে সবকিছু স্থির হয়ে থাকলেও তিনি খেয়াল করলেন গাছের পাতাগুলো নড়ছে। তিনি নিজেকে বললেন, ‘এখানে নিশ্চয়ই শক্তি আছে। কেন আমরা সেটাকে ব্যবহার করবো না’।
এরই ফলাফল হচ্ছে ওয়াইন্ড ট্রি বা বাতাস গাছ। জেরোমির কোম্পানি নিউওয়াইন্ড বায়োমিমেটিক্সের সূত্র ব্যবহার করে এরকম দুটি প্রোটোটাইপ উদ্ভাবন করেছে।
নিউওয়াইন্ড-এর এরোডায়নামিক্স স্টাডিজ ম্যানেজার জুলিয়া রিভুজ ৭০ সেন্টিমিটার লম্বা একটি কৌণিক জিনিস দেখান যেগুলোকে তারা নাম দিয়েছেন ‘এরো-লিফ’। এটি একধরণের ওয়াইন্ড টার্বাইন যেটি ১৯২২ সালে আবিষ্কার করেন ফিনল্যান্ডের সিগার্ড জোহানেস স্যাভোনিয়াস।
১২ মিটার উচ্চতার একটি বাতাসগাছে এরকম ৭২টি এরো-লিফ থাকে। রূপালী রঙের শাখা-প্রশাখায় এগুলো ঝুলে থাকে। ছোট ছোট টার্বাইনগুলো কোন শব্দ করে না, কিন্তু কাজ করে দ্রুত। বাতাসের গতি পরিবর্তন হলে টার্বাইনের কাজকর্মও বদলে যায়।
ফ্রান্সে ইতোমধ্যেই ২ হাজার বায়ুকারখানা রয়েছে। গ্রামাঞ্চল এবং সমুদ্র থেকে দূরে আরও ৮ হাজার কারখানা নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কিন্তু শহরগুলোতে বাতাসের শক্তি কাজে লাগানোর জন্য ওয়াইন্ড ট্রি ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
নিউওয়াইন্ড বলছে, প্রতিটি ওয়াইন্ড ট্রির দাম পড়বে ২৭ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলার। একেকটি গাছ দিয়ে ১৫টি রাস্তার বাতি, একটি ইলেকট্রিক কার রিচারজ স্টেশন এবং একটি ঘরের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে। পরিবেশের উন্নয়নে এইধরনের শক্তির ব্যবহার কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে পরিবেশবিদেরা ধারণা করছেন।