একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সাথে পাল্লা দিয়ে এখনকার বাচ্চারা বড় হচ্ছে আধুনিক হয়েই। আগে যেখানে একটি পরিবারে বড়জোর একটি কম্পিউটারই ছিল সেখানে এখন বাচ্চার ব্যবহারের জন্য বাবা-মা ব্যক্তিগত কম্পিউটারের ব্যবস্থা করে থাকেন। আর সেটা থাকে তাদের শোবার ঘরেই। সেই সাথে মোবাইল, ট্যাব ইত্যাদি ডিভাইস তো আছেই।
এসব কারণে সন্তানদের উপরে নজরদারি করা কিছুটা কঠিন হয়ে পড়েছে বাবা-মায়েদের জন্য। নিজের ব্যক্তিগত ডিভাইসে সন্তান কি করছে, কি দেখছে তা সবসময় খেয়াল রাখতে পারেন না তারা। ফলে বাচ্চারা পরিচিত হচ্ছে ইন্টারনেটে অনাকাঙ্খিত জগতের সাথে।
এসব থেকে নিজেদের সন্তানকে রক্ষা করতে বাবা-মায়েদের প্রয়োজন যথাযথ পরামর্শ এবং সেগুলোর যথোপযুক্ত প্রয়োগ। ইন্টারনেটের অপব্যবহার থেকে বিভিন্ন বয়সের শিশুদের রক্ষা করতে বয়সভিত্তিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ সিরিজ আকারে প্রকাশের উদ্যােগ নিয়েছে চ্যাম্পস টোয়েন্টিওয়ান ডটকম। গত পর্বে প্রকাশ করা হয়েছিলো ৫ বছরের কমবয়সী বাচ্চাদের জন্য পরামর্শ। আজ প্রকাশ করা হলো ৬-৯-১২ বছর বয়েসী শিশুদের ক্ষেত্রে করণীয়।
৬-৯ বছর
– ৫ বছরের কমবয়সী বাচ্চাদের মত এদের জন্যও প্যারেন্টাল কন্ট্রোল বা এ ধরণের বাধ্যবাধকতাগুলো ব্যবহার করুন।
– এদের ছোট ভাইবোনদেরকে এরা ইন্টারনেট, মোবাইল বা অন্যান্য ডিভাইসে কি দেখাবে বা না দেখাবে সেসব বিষয়ে শিক্ষা দিন।
– এ বয়সী বাচ্চাদের কি ধরণের গেম বা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস কিনে দেয়া উচিত সে বিষয়ে অন্য বাবা-মায়েদের সাথে পরামর্শ করুন।
– যেসব কনটেন্টের জন্য এ বয়সী বাচ্চারা এখনো উপযুক্ত হয়নি বাচ্চারা জোরাজুরি বা কান্নাকাটি করলেও তাদের সেটা দেখতে বা করতে দেবেন না।
১০-১২ বছর
– এই বয়সে সাধারণত বাচ্চারা মোবাইল বা ট্যাবলেটের মত ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসগুলো হাতে পেয়ে থাকে। এগুলো তাদের হাতে তুলে দেয়ার আগেই এসব কীভাবে ব্যবহার করা উচিত সে ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দিন।
– মোবাইল বা এসব ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস কীভাবে নিরাপদে রাখতে হবে যেন চুরি বা হারিয়ে না যায় সে বিষয়ে তাদের নির্দেশনা দিন।
– অনলাইনে মন্তব্য করা এবং কোন ছবি বা ভিডিও শেয়ার করার সময় কোন কোন বিষয় মাথায় রাখতে হবে সে ব্যাপারে তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিন।
– ইন্টারনেটে তারা কি দেখবে বা না দেখবে সে ব্যাপারে তাদের যথাযথ দিক নির্দেশনা দিন। এ সময় তারা সাধারণত তাদের শারীরিক পরিবর্তন বা বিভিন্ন সম্পর্ক নিয়ে চিন্তিত থাকে এবং এসব বিষয়ে তথ্য খোঁজার চেষ্টা করে। তাদের সাথে এসময় পাশে থাকুন।
– ফেসবুক বা ইউটিউবের মত ওয়েবসাইটগুলোতে সর্বনিম্ন ১৩ বছর বয়সসীমা দেয়া থাকে। বাচ্চারা যাতে এ সীমার মধ্যে থাকে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করুন।
– বাচ্চাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দিন যে, যেসব কাজ সে মানুষের সামনাসামনি করতে পারবে না সেসব যেন কখনও ইন্টারনেটেও না করে।
(* অন্যান্য বয়সসীমা আগামী পর্বে)