এখন সিলেবাস কমিয়ে আনতে হবে

অবরোধে আমার এবং আমার বাচ্চার দুজনের স্কুলই টানা বন্ধ। এ বছরই প্রথম স্কুলে যাচ্ছে আমার সন্তান পারিজাত শরিফ। সেইন্ট সিলভিয়া ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে প্লে গ্রুপে ভর্তি করেছি তাকে। খুব স্বাভাবিকভাবেই ওর স্কুল নিয়ে প্রথম প্রথম যে উচ্ছাস আমাদের মধ্যে ছিলো তা এখন উদ্বেগে পরিণত হয়েছে।

এমনকি আমি যে স্কুলের শিক্ষক সে স্কুলেও জানুয়ারি মাসে যেসব প্রোগ্রাম হওয়ার কথা ছিলো সেগুলো ফেব্রুয়ারি মাসে শিফট করেছি আমরা। এবং ফেব্রুয়ারিতে যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে তাও জানি না।

আমার বাচ্চার বয়স এখন তিন বছর। স্বাভাবিকভাবেই আমি আমার বাচ্চার প্রথম স্কুল নিয়ে বেশ উচ্ছসিত ছিলাম। কিন্তু এখন সেই আমিই মেনে নিতে পারছি না কেনো আমার বাচ্চা স্কুলে যেতে পারছে না। ওর ব্যাগ কেনা, ড্রেস কেনা সবই ঠিক ছিলো, এখন শুধু স্কুলে যাওয়াটাই হচ্ছে না। এজন্য আমার নিজেরই খুব খারাপ লাগছে।

আমার স্কুলে ৬ মাসের সেমিস্টার থাকে। ইতিমধ্যে একমাস চলে গেছে। এর ফলে এখন আমাদের পাঁচ মাসের মধ্যে সেমিস্টার শেষ করতে হবে। যেটা শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই কঠিন হয়ে যাবে। এতে বাচ্চাদের এবং শিক্ষকদের ওপর চাপ পড়বে। আর অন্যান্য যে সব কার্যক্রম থাকে সেগুলো হওয়ার তো কোনো সম্ভাবনাই নেই এখন।

এখন যেটা করতে হবে যে শুক্রবারেও আমাদেরকে স্কুল খোলা রেখে ক্লাস নিতে হবে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আমাদের সিলেবাস কমিয়ে আনতে হবে। স্বাভাবিক সিলেবাসে যদি ১ থেকে ১০ পর্যন্ত কোনো অধ্যায় শেখানোর কথা থাকে সেখানে শেষের দুটি অধ্যায় বাদ দিতে হবে। অর্থ্যাৎ ছেলেমেয়েরা আর কোনোদিনই ওই দুটি অধ্যায় শেখার সুযোগ পাবে না স্কুলে।

এখন সেটাই করতে হবে আমাদের। আমরা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে কাজ করি। রাস্তায় নিরাপত্তা নেই। এজন্য ওদের আমরা স্কুলেও আনতে পারছি না। তার কারণে চাইলেও ছয়মাসের সিলেবাস চারমাসে তাদের দিয়ে শেষ করাতে পারবো না। এতে করে তারাও কম শেখার সুযোগ পাবে। পরের ক্লাসে তারা এজন্য অসুবিধার সম্মুখিন হবে। আর ক্ষতিটা হবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মেরই।

আফসানা রিয়া
শিক্ষক ও অভিভাবক, প্লে পেন স্কুল

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন