সোফিয়া নামটি এখন বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। এই নামটি যেমন মেয়েদের ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম, তেমনই আলোচিত সৌদি আরবের নাগরিকত্ব পাওয়া সোফিয়া রোবটের জন্যও। বিশেষ করে গতবছর ঢাকায় অনুষ্ঠিত ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে অংশ নিয়ে আলোড়ন তুলেছিলো। তবে এবার সোফিয়ার বিকল্প বাংলাদেশি রোবট নিয়েও আগ্রহের শেষ নেই। বেসিস সফটএক্সপো ২০১৮ এ অংশ নিয়ে সবার দৃষ্টি কেড়েছে ‘ব্যাংরো’ নামক এই রোবট।
ঢাকা পলিটেনিক ইনস্টিটিউটের একদল শিক্ষার্থী তৈরি করা এই রোবট জিতে নিয়েছে সেরা উদ্ভাবনী প্রকল্পের পুরস্কার।
ব্যাংরো নামটি বাংলা শব্দের ‘ব’ অক্ষর, ব্যাংক শব্দের ‘্যাং’ ও রোবট শব্দের ‘রো’ থেকে নেওয়া হয়েছে। কারণ এই রোবটের কাছে রয়েছে বিভিন্ন তথ্যের ভান্ডার। বাংলা ভাষাও বুঝতে সক্ষম এটি।
ব্যাংরো, কথা বলতে পারে, তথ্য দিতে পারে তথ্য, চলতে পারে, এমনকি মানুষকে চিনতেও পারে। ব্যাংরো বলেই ডাক দিলে সে উত্তর দেয়। কোনও তথ্য জানতে চাইলে সে তাৎক্ষণিকভাবে সেটি জানিয়ে দেয়। সামনে, ডানে-বামে কিংবা পিছনে যেতে বললে সেটি করে।
ব্যাংরোর কপালে থাকা ক্যামেরা দিয়ে সে সামনের মানুষটির ছবি তুলতে পারে। হ্যান্ডসেক করতে পারে। বর্তমানে অফলাইন কমান্ডের মাধ্যমেই চলছে এই রোবট। তবে আগামীতে ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে এর মূল নির্মাতা ফরিদ হোসেন।
ফরিদ বলেন, রোবটের প্রতি দুর্বলতা থাকার কারণে রোবট তৈরির চিন্তা মাথায় আসে। গত বছরের নভেম্বরে ব্যাংরো নিয়ে কাজ শুরু করেন তারা। তবে শুধু কথা বলা বা তথ্য দেয়ার কারণেই নয়, এই রোবটকে তিনি দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার উপযোগি করতে চান। ইন্ডাস্ট্রিতে কাজে লাগাতে চান, যেমন ভারি জিনিষপত্র এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিতে এটি যাতে সাহায্য করতে পারে। খুব শিগগিরই ব্যাংরোর ভেতরে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ডেভেলপ করা হবে, যাতে এটি ডায়নামিক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে।
একইসাথে বর্তমানে ব্যাংরোর জন্য বাংলা ভয়েস রিকগনিশন এপিআই নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। পুরো প্রকল্পে প্রায় ৮ থেকে ১২ জন কাজ করছেন। এদের সবাই ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্রনিক্স বিভাগের শিক্ষার্থী। নিজস্ব অর্থায়নে একটি ল্যাপটপ, ক্যামেরা ছাড়াও অন্যান্য যন্ত্রাংশের জন্য প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ করেছেন তারা। এই প্রকল্পে সার্বিক সহযোগিতা করছে ইনোভেশন প্রতিষ্ঠান মাস্টার ল্যাবস।