ডেড সী বা মৃত সাগর প্রকৃতপক্ষে একটি হ্রদ। কিন্তু এটি আকারে এতই বিশাল যে একে সমুদ্র বলেই ডাকা হয়। এই ডেড সী জর্ডানে অবস্থিত। এর পশ্চিমে দিকে পশ্চিম তীর এবং ইসরাইল আর পূর্ব দিকে জর্ডান অবস্থিত। এটি দৈর্ঘ্যে প্রায় ৫০ কিলোমিটার আর এর সর্বোচ্চ প্রস্থ ১৫ কিলোমিটার, গড় গভীরতা ৩০৬ মিটার। তবে ডেড সী’র সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, এর পানিতে লবনাক্ততার পরিমাণ। জিবুতির আসাল হ্রদের পর এটি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লবণাক্ত পানির প্রাকৃতিক আধার।এই সাগরের পানির লবণাক্ততা শতকরা ৩০ ভাগ যা অন্যান্য সমুদ্রের পানির চাইতে ৮.৬ গুণ বেশি লবণাক্ত । এর আরেকটি বিশেষত্ব হচ্ছে এই স্থানটি পৃথিবীর সবচাইতে নিম্নতম স্থান বা স্থলভূমি।
কিন্তু এই হ্রদটির নাম আসলে ডেড সী কেন হল? এর কারণ হচ্ছে এখানকার পানিতে অস্বাভাবিক পরিমাণে লবণের উপস্থিতি।এই হ্রদের পানিতে লবণের পরিমাণ এতো বেশি হওয়ার কারণেই এখানে কোন ধরণের গাছ-গাছড়া, মাছ, পোকামাকড় বা কোন ধরণের জলজ জীবই বাঁচতে পারে না। শুধু তাই নয়, ডেড সী’র পানিতে লবনাক্ততা এতই বেশি যে এই হ্রদের পানিতে মানুষ বা অন্য কোন কিছুই কখনও ডোবে না, এমনকি চেষ্টা করলেও ডোবানো যায় না।
আসলে ডেড সী’র অবস্থান হচ্ছে আরবের শুষ্ক অঞ্চলে। এখানে বৃষ্টিপাত প্রায় হয়ই না বলতে গেলে। অথচ প্রচণ্ড রোদ আর গরমের কারণে এই হ্রদের পানি প্রচুর পরিমাণে বাষ্পীভূত হয়। ফলে দিনের পর দিন নদীবাহিত লবণ জমে এই হ্রদের পানি অতিরিক্ত পরিমাণে লবণাক্ত হয়ে গিয়েছে। ডেড সী’র পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ প্রায় ৩০%। এখানকার পানির ঘনত্ব ১.২৪ কেজি/লিটার। একারণে ডেড সী’র পানির আপেক্ষিক গুরুত্ব মানুষের শরীরের আপেক্ষিক গুরুত্বের চাইতে বেশি হয়ে গিয়েছে। ফলে ডেড সী’তে কোন মানুষ ডোবে না। হাত-পা নাড়িয়ে খুব সহজেই এই পানিতে ভেসে থাকা যায়।