বিজ্ঞান নিয়ে অনেকের মনেই ভয়ভীতি থাকে। জটিল সব সূত্র, গাণিতিক ব্যাখ্যা আর কাঠখোট্টা সব শব্দ শুনলেই কেমন যেন ভয় ভয় লাগে। জটিল সব ঘটনাকে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়ে সহজভাবে তুলে ধরার কাজটিই করছে সায়েন্স রকস টিভি অনুষ্ঠানটি। প্রতি সপ্তাহে ২টি করে ৫২ সপ্তাহে মোট ১০৪টি মজার মজার সায়েন্স এক্সপেরিমেন্ট দেখানো হবে তোমাদের আর বলে দেয়া হবে সেটা কেন হলো, কিভাবে হলো। আজ এক ঝলক জেনে নেয়া যাক সায়েন্স রকস টিভি অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে দেখানো ‘Gobstopper Candy Science’ পরীক্ষাটি।
হ্যাঁ, আমি চকলেট ক্যান্ডির কথা বলছি, হাতে পেলেই যেন মুখে পুরে দিতে মন চায় ! তবে আজ তা চোখ বন্ধ করে মুখে পুরে দেওয়ার জন্য নয়। আজ আমরা গবস্টপার ক্যান্ডি দিয়ে পানির বিশেষ ধর্ম পরীক্ষা করে দেখবো। Gobstopper শব্দটির ইংরেজি আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বড় ও শক্ত গোলাকার বিশিষ্ট মিষ্টান্ন।
কি কি লাগবেঃ
আজ যে পরীক্ষা নিয়ে আলোচনা করবো তা একদম সহজ একটি পরীক্ষা। এর জন্য তেমন বিশেষ কিছু প্রয়োজন পড়ে না, হাতের নাগালেই থাকা কিছু উপাদান দিয়েই পরীক্ষাটি সম্পাদন করা যাবে। এই পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন একটি খাবার প্লেট, অল্প পরিমাণের পানি আর বিভিন্ন রঙের কয়েকটি গবস্টপার ক্যান্ডি বা চকলেট জ্যাম।
কিভাবে করবোঃ
প্রথমে খাবার প্লেটে কয়েকটি ক্যান্ডি নেই। ক্যান্ডিগুলোকে রঙ অনুসারে চার বা পাঁচ ভাগে ভাগ করে বসায়। যেমনঃ তিনটা লাল, তার পাশে তিনটা কমলা, তারপর তিনটা হলুদ, তিনটা সবুজ, তিনটা কালো ইত্যাদি। এভাবে, ইচ্ছেমতো প্লেটে ক্যান্ডি সাজিয়ে নেওয়ার পরে আস্তে আস্তে খাবার প্লেটে কিছু পরিমাণ পানি ঢেলে কিছুক্ষন অপেক্ষা করি। কি দেখছি আমরা ?? দেখা যাবে, আস্তে আস্তে ক্যান্ডির রঙ পানিতে মিশছে। আরো কিছুক্ষন অপেক্ষা করলে দেখবো যদিও একই প্লেটে, একই পানিতে বিভিন্ন রঙের ক্যান্ডি একসাথে আছে তারপরও ক্যান্ডির রঙগুলো পরস্পরের সাথে মিশছে না। আরও আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, আলাদা আলাদা পানির রঙ তৈরি হয়েছে এক প্লেটে !! কিন্তু কেন ??
কেন হলোঃ
আমরা জানি, পানি একটি পোলার মোল ও সার্বজনীন দ্রাবক হিসেবে বহুল পরিচিত; যা হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত। পোলারিটির কারণে পানির হাইড্রোজেন প্রান্ত ধনাত্বক ও অক্সিজেন প্রান্ত ঋনাত্বক চার্জে চার্জিত থাকে। যখন পানির সাথে একটা রঙের মিশ্রণ ঘটে তখন ওই রঙের ধনাত্বক প্রান্ত পানির অক্সিজেনের সাথে এবং ঋনাত্বক প্রান্ত পানির হাইড্রোজেনের সাথে যুক্ত হয়। তবে পানির সাথে একটা রঙের মিশ্রণের পরে পানির পোলারিটি কমতে থাকে ও তখন অন্য রঙ এসে পানির সাথে সহজে মিশতে পারে না। ফলে পানির এক একটা অংশ এক এক রঙে আলাদা আলাদা ভাবে সজ্জিত হতে থাকে। বাসায় কিংবা স্কুলে এই ছোট্ট পরীক্ষাটি করে বন্ধুদের বা বাসার সবাইকে চমকে দিতে পারো তুমি !!