আমরা জানি যে, আমাদের সৌরজগতে নয়টি গ্রহ আছে। এর মধ্যে সূর্যের থেকে দূরত্বের হিসাবে মঙ্গলের স্থান চতুর্থ। এই গ্রহগুলো সূর্যের প্রতিফলন দ্বারা উজ্জ্বল দেখা যায়। মঙ্গল গ্রহ পৃথিবী থেকে প্রায় ৫৬ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে। মঙ্গল গ্রহকে রক্তবর্ণ লাল বলে মনে হয়। মঙ্গল গ্রহকে লাল দেখা যায় কেন তা কি বলতে পারবে ?
সূর্যের সর্বাপেক্ষা নিকটতম গ্রহ হলো বুধ বা Mercury। প্রায় সূর্যের সঙ্গে এর উদয় হয় ও সূর্যের সঙ্গে অস্ত যায়। ভেনাস ( Venus ) বা শুক্র গ্রহ ঠিক কিছু পূর্বে অথবা সূর্যাস্তের কিছু পরে দেখা যায়। তাই আমরা সন্ধ্যার আকাশে যে শুকতারা বা সন্ধ্যাতারা দেখতে পাই এটিই মূলত শুক্রগ্রহ। কিন্তু মঙ্গল গ্রহকে আমরা মাঝে মাঝে দেখতে পাই। মঙ্গল গ্রহ রক্তাত্ত লাল রঙের জন্য তা আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সকল গ্রহগুলোর মধ্যে উজ্জ্বলতায় শুক্রের পরে মঙ্গলের অবস্থান।
মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে শতকরা ১-২ ভাগ আর্গন, ২-৩ ভাগ নাইট্রোজেন, ৯৫ ভাগ কার্বন-ডাইঅক্সাইড এবং ০.৩ ভাগ অক্সিজেন আছে। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে অল্প পরিমাণ জলীয়বাষ্প আছে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ঘনত্বের তুলনায় মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব শতকরা এক ভাগ। এই কারণে মঙ্গলের তাপমাত্রায় অনেক পরিবর্তন দেখা যায়। মাঝে মাঝে মঙ্গল গ্রহের উপর দিয়ে মেঘ চলাচল করতে দেখা যায়।
মঙ্গলের বহির্ভাগে উজ্জ্বল ও অন্ধকার এলাকাসমূহ দেখা যায়। এই এলাকাগুলি ক্রমাগত তাদের আকৃতি পরিবর্তন করে। তাতে অনেক উচ্চভূমি আছে যা লাল বর্ণের মরুভূমি দ্বারা আবৃত। এই মরুভূমিতে খনিজ পদার্থের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আয়রন-অক্সাইড। মঙ্গলে প্রতি সেকেন্ডে ১৫০ কিলোমিটার বেগে বায়ু প্রবাহিত হয়। এর কারণে প্রচুর পরিমাণে লাল রঙের বালু উড়তে দেখা যায়। মঙ্গলের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কম বলে বালু অনেক সপ্তাহ ধরে বায়ুমণ্ডলে অবস্থান করে। বায়ুমণ্ডলে লাল বালু অনেকদিন ধরে অবস্থান করে বলে মঙ্গল গ্রহকে লাল দেখায়।