শুরু হয়ে গেছে ২০১৫ বিশ্বকাপ ক্রিকেট, আর এই জমকালো খেলার আসর নিয়ে ক্রিকেট ভক্তদের মাঝে উন্মাদনার শেষ নেই। যার যার প্রিয় দল নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছেই। এর পাশাপাশি আমরা দিয়ে যাচ্ছি ক্রিকেট সম্পর্কীয় কিছু মজার সাধারণ তথ্য।
ক্রিকেট সম্ভবত একমাত্র এমন খেলা, যেটিতে খেলোয়াড়দের পারদর্শীতার পাশাপাশি খেলার মাঠেরও নিখুঁত হওয়া প্রয়োজন। ক্রিকেট খেলায় মাঠের যতটা যত্ন নিতে হয়, ততটা যত্ন অনেক কম খেলার মাঠেরই নিতে হয়। মাঠের ঘাস যদি একটু এবড়ো-থেবড়ো থাকে, কিংবা কোথাও উঁচু-নিচু থাকে তাহলেই তা বলের গতির তারতম্য ঘটায়। ক্রিকেটের মাঠের সবচেয়ে বেশী যত্ন নিতে হয় পিচের। কারন পিচ যদি নিখুঁত না হয়, তবে তা বোলিং ও ব্যাটিংয়ে অনেক প্রভাব ফেলে। এজন্যই যেকোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে দেখা যায় বিশেষজ্ঞরা পিচ ও মাঠ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। পিচ দেখে অধিনায়করা সিদ্ধান্ত নেন আগে ব্যাটিং করবেন নাকি বোলিং।
পানি ক্রিকেট মাঠের একটি বড় শত্রু। মাঠের কোথাও পানি জমে থাকলে তা বলের গতিতে প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে পিচ যদি ভেজা থাকে, তবে বোলারদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়বে। কারণ ভেজা মাটিতে ফাস্ট বোলিং করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। তাই খেলার মাঝখানে বৃষ্টি নামলে দেখা যায় খেলোয়াড়রা খেলা রেখে ড্রেসিং রুমে চলে যান আর পুরো মাঠ ও পিচ পলিথিন বা পিচ কভার দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। কিন্তু তার পরেও অনেক সময় দেরী হয়ে যায় এবং পিচ ভিজে যায়। তখন মাঠ থেকে পানি সরানোর ব্যবস্থা করা হয়। ক্রিকেট মাঠ থেকে পানি সরানোর জন্য বেশ কিছু পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়।
ক্রিকেট মাঠ এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে এতে পানি জমে না থাকে। এর মাঝের দিক সামান্য উঁচু হয়ে থাকে যাতে পানি সহজে বের হয়ে যেতে পারে। আবার এতটা উঁচু হয়না যাতে তা বলের গতিতে প্রভাব ফেলবে। এছাড়া মাটি উঁচু হলেও মাঠের ঘাস বলকে সমানভাবে যেতে সাহায্য করে। তারপরেও অনেক সময় বৃষ্টির পানি মাঠে জমে থাকতে পারে।
সাধারণত মাঠে পানি জমে থাকলে বিশাল বিশাল কয়েকটি স্পঞ্জ যা একটি রোলিং মেশিনের চাকায় লাগানো থাকে। এর সাহায্যে পুরো মাঠে ঘুরিয়ে আনা হয় রোলিং মেশিনটি। আমরা জানি যে, স্পঞ্জ খুব সহজে পানি শুষে নেয়, তাই এখানেও এগুলো মাঠে জমে থাকা পানি শুষে নিয়ে মাঠ শুকিয়ে দেয়।
তারপরেও যদি কোথাও পানি জমে থাকে, তাহলে সেখানে কাঠের গুঁড়ো ফেলা হয়। কাঠের গুঁড়োও ভালো পানি শোষক, এবং কাঠের গুঁড়ো বিছানোর ফলে পানি থাকলেও মাটি নরম হয় না।
এতকিছুর পরেও যদি মাঠে পানি জমে থাকে, তবে তার জন্য শেষ উপায় হিসেবে একটি কাজই করা হয়। আর সেটা হল, একটা হেলিকপ্টার এনে মাঠের মাঝখানে রাখা হয়। হেলিকপ্টার আনার কারণটা বুঝতে একটু জটিল মনে হলেও আসলে সহজভাবে চিন্তা করলে এর কারণ বের করা কোন ব্যাপারই না। হেলিকপ্টারের বিশাল পাখার বাতাসে মাঠের পানি উড়ে সরে যায় এবং মাঠ শুকিয়ে যায়। অবশ্য এই পদ্ধতি একদম শেষ উপায় হিসেবে ব্যবহার করা হয়।