কখনও ভেবে দেখেছো যে ক্রিকেট খেলার সময় এতো দ্রুত কীভাবে স্কোর আপডেট করা হয়? বোলারের বল করার সাথে সাথে স্কোরকার্ড অর্থাৎ বলের সংখ্যা আপডেট হয়ে যায়। ব্যাটসম্যান বল মেরে রান নিতেই তা সাথে সাথে স্কোরকার্ডে রান আপডেট হয়ে যায়। আম্পায়ার আঙ্গুল তুলতে না তুলতেই উইকেটের জায়গায় সংখ্যা একটা বেড়ে যায়। কিন্তু এতো দ্রুত কীভাবে এগুলো করা হয় ?
ক্রিকেটে স্কোর আপডেট করার জন্য স্কোরার থাকে। সাধারণত প্রতি দল থেকে একজন করে স্কোরার দেয়া হয়। স্কোরারের কাজ হল দ্রুততার সাথে স্কোর আপডেট করা। কিন্তু এতো দ্রুত তা করার জন্য স্কোরাররা বিশেষ ধরণের একটি স্কোরকার্ড ব্যবহার করে থাকেন। এই স্কোরকার্ডে প্রত্যেক ব্যাটসম্যানের রান, আউট, বোলারের তথ্য, দলের মোট রান, এবং কত রানে কখন উইকেট পড়লো তা সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা থাকে।
স্কোরিং সাধারণত দুই ভাবে করা হয়, ম্যানুয়াল, এবং কম্পিউটারাইজড। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে স্কোরাররা সাধারণ স্কোরকার্ড ব্যবহার করে থাকেন। আবার স্কোর আপডেট করার জন্য কম্পিউটারের সফটওয়্যারও রয়েছে, যেটি ব্যবহার করে স্কোরাররা আরও দ্রুত এবং সহজে স্কোর আপডেট করতে পারেন। আমরা টিভিতে ক্রিকেট খেলা দেখার সময় যে স্কোরকার্ড দেখি তা মূলত সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আপডেট হতে থাকে। এসব সফটওয়্যারের মধ্যে দলের বা দলের খেলোয়াড়ের বিভিন্ন পরিসংখ্যান যুক্ত করা থাকে। উদাহারণ হিসেবে বলা যায়, ম্যাচের সময় কোন ব্যাটসম্যান রান করার সাথে সাথে তা ব্যাটসম্যানের ক্যারিয়ারের মোট রানে যোগ হয়ে যায়।
সাধারণত স্কোরাররা নিম্নোক্ত তথ্যগুলো সংরক্ষণ করে থাকেনঃ
- প্রতিটি বলের ক্ষেত্রে, কে বল করলো এবং কত রান হল, রান কি ব্যাটসম্যান বল মেরে নিল নাকি “বাই” রান হল।
- প্রতিটি ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রে, প্রতিটি রানের তথ্য।
- প্রতিটি আউটের ক্ষেত্রে, কীভাবে আউট হল, কে আউট করলো, আউট করাতে কোন ফিল্ডার যুক্ত নাকি বোলার একাই আউট করলো, এবং উইকেট পড়ার মুহূর্তে দলের রান ও উইকেটের সংখ্যা।
- প্রতিটি বোলারের ক্ষেত্রে, কত বল করলো, কত রান দিল, কতগুলো উইকেট নিল, এবং কতগুলো মেইডেন ওভার নিল।
আসলে স্কোরকার্ডগুলোই এমনভাবে তৈরি হয় যে এগুলোর সাহায্যে স্কোর দ্রুত আপডেট করা খুবই সহজ। নিচের ছবিটি একটি ম্যানুয়াল স্কোরকার্ডের, আমরা এখন বিশ্লেষণ করে দেখি যে কোন ঘরটি কোন তথ্যের জন্য।
স্কোরকার্ডটিতে দেখা যাচ্ছে ব্যাটসম্যানের নামের পাশে তাদের রানসংখ্যা লেখা আছে। ১,১,২,৪ এভাবে রান লেখার মানে হল প্রতি বলে ঐ সংখ্যক রান নেওয়া হয়েছে। তার পাশে লেখা আছে কীভাবে আউট হল, কে আউট করলো, এবং কত রান করে আউট হল। ব্যাটসম্যানের রানের নিচে ১ থেকে ৫২৫ পর্যন্ত সংখ্যা লেখা একটি ঘর দেখা যাচ্ছে। এটি আসলে দলের মোট রানের তথ্য সংরক্ষণ করে। ব্যাটসম্যান যদি ইনিংসের প্রথম বলেই চার মারেন, তবে দলের রান হবে চার। এক্ষেত্রে স্কোরার ১ থেকে ৪ পর্যন্ত সংখ্যাগুলো কেটে দেবেন, অর্থাৎ দলের রান চারে এসে দাঁড়াবে। রানের ঘরের পাশের ঘরটিতে কতগুলো বাই রান হল তা লেখা হয়। এর নিচে দলের কত রানের সময় উইকেট পড়লো তা সংরক্ষণ করা হয়। আর তার পাশে ইনিংস শেষে দলের মোট রান কত হল তা লেখা হয়। বোলারের ঘরে প্রত্যেক বোলারের নাম, ওভার, রান, উইকেট, এবং মেইডেন ওভারের সংখ্যা লেখা হয়।