অনেক মানুষের দেহেই জন্মদাগ এবং তিল থাকে। গবেষকেরা এগুলোকে মেলানকসেটিক নেভাস বললেও সবার কাছে বিউটি স্পট নামেই বেশি পরিচিত। যদিও এসব চিহ্ন আপাতদৃষ্টিতে আমাদের দেহের কোন ক্ষতিসাধন করে না তবে গবেষকেরা বলছেন এগুলো হতে পারে দূরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারের পূর্বলক্ষণ। এমনকি এসব বিউটি স্পট থেকে হতে পারে ক্যান্সারও।
মধ্যযুগে মনে করা হতো, বাবা-মায়ের জৈবিক অপরিপূর্ণতার কারণেই বাচ্চার গায়ে জন্মদাগ বা তিল দেখা যায়। তবে এগুলো সম্পর্কে আমরা এখন অনেক কিছুই জানি।
বিউটি স্পট আসলে ত্বকের এক ধরণের বিকৃতি। ত্বকের রঞ্জককোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণেই এগুলো তৈরি হয়। এরা সাধারণত কালো রঙের হয়ে থাকে। বিভিন্ন কারণে বিউটি স্পট তৈরি হয়। যেমনঃ কারও হয়ে থাকে জেনেটিক্যাল সমস্যার কারণে, অতিরিক্ত সূর্যালোক বা ভুল ওষুধের কারণ হিসেবেও এদের জন্ম হতে পারে। এছাড়া কারও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে বা হরমোনের মাত্রা কমবেশি হলেও শরীরে বিউটি স্পট দেখা দিতে পারে।
সাদা বা কালো উভয় চামড়ার মানুষেরই বিউটি স্পট থাকতে পারে। গড়ে ২০ শতাংশ সাদা চামড়ার মানুষের বিউটি স্পট থাকে, তবে কালোদের থাকে আরও কম। বিভিন্ন কারণে বিউটি স্পটগুলো বিভিন্ন রকমের হতে পারে।
পারতপক্ষে বিউটি স্পট কোন ক্ষতি না করলেও অতিরিক্ত সূর্যালোক বা অতি বেগুণী (আল্ট্রাভায়োলেট) রশ্মির কারণে এই কোষগুলো ক্যান্সার কোষে পরিণত হতে পারে। তাই চিকিৎসকরা নিয়মিত এগুলো পরীক্ষা করার উপদেশ দিয়ে থাকেন।
মূলত ৩টি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে বিউটি স্পট ক্যান্সারে রূপ নেবে কীনা। প্রথমত, চামড়ার রং। সাদা চামড়ার মানুষের এই সম্ভাবনা বেশি থাকে। দ্বিতীয়ত, কী পরিমাণ বিউটি স্পট তার দেহে আছে। তৃতীয়ত, ভৌগোলিক অবস্থান। যেসব জায়গায় সূর্য লম্বভাবে কিরণ দেয় সেখানে এর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
কিন্তু একটি বিউটি স্পট থেকে ক্যান্সার হবে কিনা তা কীভাবে বোঝা যাবে সেটি একটি প্রশ্ন? এর জন্য কয়েকটি লক্ষণের দিকে নজর রাখা যেতে পারে। ক্যান্সার সৃষ্টিকারী বিউটি স্পটগুলো অসদৃশ ও বলয় অসমান হবে। এদের রঙও হবে অস্বাভাবিক- নীল, লাল বা সাদা। এগুলো চারদিকে ধীরে ধীরে ছড়াতে থাকবে আর চুলকানি বা রক্ত পড়ার মত ঘটনাও ঘটতে পারে।
এরকম কোন লক্ষণ দেখলেই দ্রুত একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিন।