১৯০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর আমেিরকার বাসিন্দা দুইভাই অরভিল রাইট ও উইলবার রাইট যখন পুরো বিশ্ববাসীকে অবাক করে দিয়ে মানুষের সফলভাবে আকাশে উড়ার যাত্রা শুরু করলো সেদিন থেকে আজ অবধি অ্যারোপ্ল্যান বা উড়োজাহাজকে নিয়ে গবেষনা থেমে নেই। উড়োজাহাজের আবিষ্কারক হিসেবে বরাবরই এই দুই ভাইেয়র নাম উঠে এলেও উড়োজাহাজ নিয়ে গবেষনার শুরু আরো অনেক আগ থেকেই।
আর ১৮৯৬ সাল থেকে তা শুরু করেছিলেন জার্মান ইঞ্জিনিয়ার অটো লিলিয়েনথাল। তবে তার নকশায় বা গবেষনায় প্রচুর ভুল থাকায় তিনি আলোর মুখ দেখননি। তাই তার উড়োজাহাজ সংক্রান্ত গবেষনাও বেশিদূর এগোয়নি। পরবর্তীতে তার গবেষনার সূত্র ধরেই নতুন করে কাজ শুরু করে অরভিল রাইট ও উইলবার রাইট।
আধুনিক উড়োজাহাজগুলো অনেক গতিশীল ও নিরাপদ হলেও একে আরো উন্নত করতে প্রতিনয়ত কাজ করছে এ সংক্রান্ত গবেষনা প্রতিষ্ঠানগুলো। আমেরিকান প্রতিষ্ঠান নাসা (NASA) বা National Aeronautics and Space Administration সাধারণত মহাকাশ নিয়ে গবেষণা করে।
তবে মহাকাশ নিয়ে কাজ করার বাইরেও নাসা আরও বেশ কিছু কাজ করে থাকে যেগুলো অনেকেরই অজানা। এর মধ্যে অন্যতম একটি কাজ হচ্ছে উড়োজাহাজের নকশা নির্মাণ।
দ্রুততর এবং নিরাপদ ভ্রমণের জন্য এসব প্লেন তৈরির কাজ করে থাকে নাসা। এ বিষয়টা মাথায় রেখেই নাসা ভবিষ্যতের জন্য দারুণ কিছু উড়োজাহাজ তৈরি করতে যাচ্ছে। এদের মধ্যে কোন কোনটা হয়তো আকাশে উড়বে ২০২৫ সালেই।
বিভিন্ন বেসরকারি উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যেমন লকহিড মার্টিন, নরথ্রপ গ্রুমান, বোয়িং ইত্যাদির সাথে মিলিত হয়ে এসব উড়োজাহাজ নির্মাণের কাজ করছে নাসা।
লকহিড মার্টিনের সাথে যুক্ত হয়ে এ প্লেনটি তৈরি করতে যাচ্ছে নাসা। এটি হবে একটি সুপারসনিক বিমান। তবে এ জাতীয় বিমান প্রচুর শব্দ তৈরি করলেও এ প্লেনে শব্দ কিভাবে কমানো যায় তা নিয়ে নির্মাতারা কাজ করে যাচ্ছেন।
ভবিষ্যতের সম্ভাব্য এ বিমানটিকে ‘হাইব্রিড উইং বডি’ হিসেবে ডাকা হয়ে থাকে। এই বিমান হবে জ্বালানি সাশ্রয়ী, একই সাথে কম শব্দ ও বায়ু দূষণকারী। নাসা এটির নাম দিয়েছে N3-X ।
কম্পিউটারে তৈরি করা এ ছবিটি ভবিষ্যতে সম্ভাব্য একটি ‘ফ্লাইং উইং’ বিমানের ছবি। জনবহুল এলাকার উপর দিয়ে এ বিমান খুব কম শব্দে উড়ে যেতে পারবে। বিমানটি তৈরির কাজ করছে নরথ্রপ গ্রমান নামক প্রতিষ্ঠান। প্রথমে কার্গো বিমান হিসেবে যাত্রা শুরুর পরিকল্পনা করলেও পরবর্তীতে যাত্রীও বহন করতে পারে এ বিমান।
লকহিড মার্টিন ভবিষ্যতের জন্য নির্মাণ করতে যাচ্ছে এ বিমানটি। অত্যন্ত হালকা হওয়ার সাথে সাথে এ বিমানে থাকবে অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি। এই বিমানের ইঞ্জিন হবে পাঁচগুণ বেশি শক্তিশালী যা এর কার্যক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেবে অনেকগুন।
ভবিষ্যতে এই বিমানটি নির্মাণে নাসার সাথে একত্রিত হয়ে কাজ করছে লকহিড মার্টিন। বিমানের পাখার নিচে উল্টা ‘ভি’ (V) আকৃতির ইঞ্জিন থাকবে যা এর সনিক বুম অনেকখানি কমিয়ে দেবে। ২০১০ সালের এপ্রিলে NASA Aeronautics Research Mission Directorate এ যে দুইটি বিমানের নকশা দেখানো হয় তার মধ্যে এটি একটি। এ বিমানটি ২০৩০-২০৩৫ সালের মধ্যে আসতে পারে।
‘আইকন-২’ নামের ভবিষ্যতের এই সুপারসনিক এয়ারক্রাফটটি নির্মাণ করতে যাচ্ছে দ্য বোয়িং কোম্পানি। যেভাবে এই বিমানটি নকশা করা হচ্ছে তাতে এটি একই সাথে জ্বালানি সাশ্রয়ী হবে এবং কম শব্দ সৃষ্টি করবে। দেবে। ২০১০ সালের এপ্রিলে NASA Aeronautics Research Mission Directorate এ উপস্থাপিত দ্বিতীয় বিমান এটি। এ বিমানটিও ২০৩০-২০৩৫ সালের মধ্যে আসতে পারে।