শব্দের প্রতিফলনের বাস্তব উদাহরণ হচ্ছে প্রতিধ্বনি। রাতে ফাঁকা মাঠে জোরে শব্দ করলে সেই শব্দ আবার কিছুক্ষণ পরে শোনা যায়। এরই নাম প্রতিধ্বনি। কোন উৎস থেকে সৃষ্ট শব্দ যদি কোন মাধ্যমে বাধা পেয়ে উৎসের কাছে ফিরে আসে তবে তাকে শব্দের প্রতিধ্বনি ( Echo) বলে।
কোন মাধ্যমে বাধা পেয়ে উৎসের কাছে দাঁড়ানো শ্রোতা যে প্রতিধ্বনি শুনতে পারবে তেমন কোনো কথা নেই। প্রতিধ্বনি শুনতে হলে শ্রোতা ও প্রতিফলকের মধ্যে একটি ন্যূনতম দূরত্ব বজায় রাখতে হয়।
আরেকটি মজার বিষয় হচ্ছে কোনো শব্দ শোনার পর প্রায় ০.১ সেকেন্ড পর্যন্ত এর রেশ আমাদের মাথায় থাকে। এই সময়কে শব্দানুভূতির স্থায়িত্বকাল ( Persistance of Sound ) বলে। অর্থাৎ, প্রতিধ্বনি শোনার জন্য মূলধ্বনি ও প্রতিধ্বনি শোনার মধ্যবর্তী সময়ের পার্থক্য অন্তত ০.১ সেকেন্ড হওয়া প্রয়োজন। এর কম হলে প্রতিধ্বনি শোনা যাবে না। অবশ্যই মনে প্রশ্ন আসছে, প্রতিধ্বনি শুনতে হলে শ্রোতা ও প্রতিফলকের মধ্যে ন্যূনতম দূরত্ব কত হবে ?
আমরা যদি প্রতিধ্বনি শুনতে চাই তাহলে ০.১ সেকেন্ডে শব্দকে দুইবার দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে।
আমরা জানি, শব্দের বেগ = ( দূরত্ব / সময় )
………… (i)
এখানে,
V = শব্দের বেগ = 332ms-1
2d = d+d =দূরত্ব {শব্দ প্রতিফলকে বাধা পাওয়ার আগে যে দূরত্ব অতিক্রম করে (d) এবং বাধা পাওয়ার পরে আবার সেই একই পথে ফিরে আসে (d)}
t = সময় = 0.1 second
(i) নং সমীকরণে মান বসিয়ে পাই,
2d = Vt
প্রতিধ্বনি শুনতে হলে শ্রোতা ও প্রতিফলকের মধ্যে ন্যূনতম দূরত্ব 16.6 m হওয়া প্রয়োজন ।
প্রতিধ্বনির সাহায্যে সমুদ্রের গভীরতা বা কোনো কূপের গভীরতা সহজে নির্ণয় করা যায়। তবে সমুদ্রের গভীরতা মাপতে সমুদ্রের লোনা পানিতে শব্দের বেগ জানা থাকতে হবে।
নিচের ভিডিওতে প্রতিধ্বনির সাহায্যে কিভাবে সমুদ্রের গভীরতা সহজে নির্ণয় করা যাচ্ছে তা দেখানো হচ্ছে :