নামটা শুনেই বোঝা যাছে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত কিছুই হবে। নামটি শুনে কোন গল্প বা গল্পের বইয়ের নাম মনে হলেও এটা আসলে একটা ভিডিও গেমের নাম। আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের বিজয়, আর শত-সহস্র ত্যাগের বীরগাথা স্মরণ করিয়ে দিতেই একদল তরুণ গেইমার হাজির হয়েছেন ‘হিরোজ অব সেভেন্টি ওয়ান’ নিয়ে। তারা সবাই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
গেইমটির গল্প লিখেছেন ওমর রশিদ চৌধুরী। ১৯৭১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরে রাত ২টা ১৫ তে বরিশালের শনিরচর গ্রামে পাঁচজনের কমান্ডো দলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গেরিলা হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এগিয়ে যাবে থার্ড পারসন শুটিং ক্যাটেগরির এ গেইমটির কাহিনী।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসার শামসুল আলম, সাধারণ শ্রমিক কবির মিয়া, মেডিকেল শিক্ষার্থী তাপস মৈত্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজল ওরফে মাহবুব চৌধুরী, ইস্ট পাকিস্তান ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ডটেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী বদিউজ্জামান ওরফে বদি- এমনই কিছু চরিত্র নিয়ে গঠিত ‘শামসু বাহিনীর’ দেখা মিলবে এই হিরোজ অব সেভেন্টি ওয়ানে।
গেমটাতে দৃশ্যত কোনো লেভেল নেই। আছে ১৬টি ডিফিকাল্টি লেভেল। গেমাররা তিনটা চরিত্র নিয়ে খেলতে পারবেন। বিভিন্ন লেভেল জুড়ে ক্রমাগতভাবে পাকিস্তানি সেনা আসতে থাকবে এবং গেমারকে তিনটি চরিত্রের অস্ত্র ও দক্ষতা ব্যবহার করে এদেরকে মারতে হবে এবং নিজের ক্যাম্প রক্ষা করতে হবে।
লেভেল বাড়ার সাথে সাথে সেনা সংখ্যা, অস্ত্রের ড্যামেজ, প্রকারভেদও বাড়তে থাকবে ক্রমান্বয়ে। এভাবে ১৬টি লেভেল পার করতে পারলেই গেমার ক্যাম্পকে রক্ষা করতে পারবে।
এ গেমটির ডেভেলপমেন্ট এবং অন্যান্য কাজে ছিলেন রকিবুল আলম, আরিফুর রহমান, অভিক চৌধুরী, প্রিয়ম মজুমদার, আবদুল জাওয়াদ, পাপন জিৎ দে, রেহাব উদ্দিন, অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী ও তপেশ চক্রবর্তী।
‘পোর্টব্লিস গেমস’ নামের প্রতিষ্ঠান থেকে তৈরি এই মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গেমসের মার্কেটিং পার্টনার ছিল পেডেল ক্লাউড। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের লড়াই আর প্রতিরোধের গল্পগুলো গেমের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মাঝে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা থেকেই গেমটি নির্মাণ করেছেন তারা- এমনটাই বক্তব্য পোর্টব্লিস গেমসের।
ফ্রিলান্সিং থেকে আয় করা টাকা দিয়েই গেমটির প্রধান খরচ বহন করা হয়েছে।
৮৪ মেগাবাইটের এ গেমটি খেলা যাবে ১ জিবি ram আছে এমন যে কোনো আন্ড্রয়েড ডিভাইসে। আর কিছুদিনের মধ্যেই গেমটির আইওএস সংস্করণও চালু হবে বলে জানিয়েছেন নির্মাতারা।
১৬ ডিসেম্বরে মুক্তি পাওয়া এই গেমটি এখন ডাউনলোড করা যাচ্ছে গুগল প্লে স্টোরের এই https://goo.gl/IL0IRF লিঙ্ক থেকে।
ইতিমধ্যেই ভিডিও গেমপ্রেমীদের মাঝে ‘হিরোজ অব সেভেন্টি ওয়ান’ ডাউনলোড করার হিড়িক পড়ে গিয়েছে।এবং তাদের কাছ থেকে এটা সম্পর্কে ইতিবাচক সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে।
অনেক গেইমারই মন্তব্য করেছেন, গেমটি অনেক কঠিন হওয়ায় এটা খেলতে তাদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে। আর এ সম্পর্কে হিরোস অফ সেভেন্টি ওয়ান পরিবারের মতামত- যে আমাদের একাত্তরের যুদ্ধও তো আর সোজা ছিলনা।
এই তরুণদের সুন্দর পদক্ষেপটিকে সমর্থন জানাতে চাইলে চলে যেতে পারেন https://goo.gl/EV9Qb4 লিঙ্কে। সমর্থনকারীদের জন্য ‘হিরোজ অব সেভেন্টি ওয়ান’ টিমের পক্ষ থেকে রয়েছে মগ, টি-শার্ট, বইয়ের মত আকর্ষণীয় উপহারও।