নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার ১৪টি ভেন্যুতে ১৪টি দেশ নিয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মাঠে গড়িয়েছিল ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্ট বিশ্বকাপের একাদশতম আসর। নিউজিল্যান্ড-শ্রীলঙ্কার ম্যাচ দিয়ে শুরু হয় ২০১৫ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের।
২৯ মার্চ নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ফাইনাল ম্যাচের মধ্য দিয়ে শেষ হল এবারের এই ক্রিকেট মহাযজ্ঞ। নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে পঞ্চমবারের মতো বিশ্বসেরার ট্রফি জিতল অস্ট্রেলিয়া। বিদায়ী অজি অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক বিশ্বকাপটি উৎসর্গ করেন অকাল প্রয়াত সতীর্থ ফিলিপ হিউজকে। অন্যদিকে প্রথমবার বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলে নিউজিল্যান্ড। নতুন কিছু রেকর্ড ভাঙ্গা-গড়া, নানা তর্ক-বিতর্ক এবং অনেক ঘটনা বহুল ছিল এবারের আসর।
এদিকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪১৭ রান তুলে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে। গ্রুপ পর্বেই হয়েছে রেকর্ড ৩৫টি সেঞ্চুরি। সর্বমোট রেকর্ড ৩৮টি সেঞ্চুরি হয়েছে। যা যেকোনো বিশ্বকাপে সর্বাধিক সেঞ্চুরি।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২১৫ রান করে বিশ্বকাপে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানোর রেকর্ড গড়েন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল। তবে তা অতিক্রম করে নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল অপরাজিত ২৩৭ রান করে বিশ্বকাপের ইতিহাসে এক ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের রেকর্ড গড়েন।
শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারা টানা চার ম্যাচে সেঞ্চুরি করে গড়েন নতুন এক বিশ্ব-রেকর্ড। বাংলাদেশের মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও জিম্বাবুয়ের ব্রেন্ডন টেলর টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করে ১৯৯৬ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার মার্ক ওয়াহর করা রেকর্ড স্পর্শ করেন।
একদিনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের (৩৭২ রানের) পার্টনারশিপ গড়েন ওয়েস্ট ইন্ডিজের গেইল ও স্যামুয়েলস।
ইংলিশ পেসার স্টিফেন ফিন ও দক্ষিণ আফ্রিকান স্পিনার জেপি ডুমিনি পরপর তিন বলে তিন উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের রেকর্ড গড়েন।
বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার পাশাপাশি সর্বশেষ প্রকাশিত আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে ওয়ানডে বোলিংয়ে তালিকার এক নম্বর স্থানটা এখন মিশেল স্টার্কের।
১৯৯৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন লঙ্কান অফ স্পিনার কুমার ধর্মসেনা
২০১৫ বিশ্বকাপ ফাইনালে ফিল্ড আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
এক নজরে বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১৫
· আয়োজক : অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড
· তারিখ : ১৪ ফেব্রুয়ারি – ২৯ মার্চ
· ফরম্যাট : রাউন্ড রবিন ও নক আউট
· মোট অংশগ্রহণকারী দল : ১৪টি
· মোট ম্যাচ : ৪৮ (১টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়)
· চ্যাম্পিয়ন – অস্ট্রেলিয়া
· রানার্সআপ – নিউজিল্যান্ড
· ম্যান অব দ্য ফাইনাল – জেমস ফকনার
· টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় – মিচেল স্টার্ক
· সবচেয়ে বড় জয় (উইকেটে) – ভারত, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকা (৯ উইকেটে)
· সবচেয়ে বড় জয় (বলের হিসেবে)– নিউজিল্যান্ড (২২৬ বল)
· সবচেয়ে বড় জয় (রানের হিসেবে)– অস্ট্রেলিয়া (২৭৫ রানে)
· দলীয় সর্বোচ্চ ইনিংস – অস্ট্রেলিয়া (৪১৭/৬)
· দলীয় সর্বনিম্ন স্কোর – সংযুক্ত আরব আমিরাত (১০২/১০)
· সেরা ব্যাটসম্যান – মার্টিন গাপটিল (৫৪৭)
· সেরা ইনিংস – মার্টিন গাপটিল (২৩৭*)
· সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড় – কুমার সাঙ্গাকারা (১০৮.২০)
· সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি – কুমার সাঙ্গাকারা (৪টি)
· সর্বোচ্চ হাফ সেঞ্চুরি – স্টিভ স্মিথ (৫টি)
· দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি – ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (১৮ বলে)
· দ্রুততম সেঞ্চুরি – গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৫১ বলে)
· সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট (কম পক্ষে ৫ ইনিংস) – নিউ জিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (১৮৮.৫০)
· এক ইনিংসে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট – ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল (৩২৩.০৭)
· সেরা পার্টনারশিপ – গেইল-স্যামুয়েলস (৩৭২ রান)
· এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কা – ক্রিস গেইল (১৬)
· সর্বমোট বাউন্ডারি (চার) সংখ্যা- ২১৭০ টি
· সর্বমোট ওভার বাউন্ডারি (ছক্কা) সংখ্যা- ৪৬৩ টি
· সর্বোচ্চ বাউন্ডারি (চার) – মার্টিন গাপটিল (৫৯ টি)
· এক ইনিংসে সর্বোচ্চ বাউন্ডারি (চার) – মার্টিন গাপটিল (২৪ টি)
· সর্বোচ্চ ওভার বাউন্ডারি (ছক্কা) – ক্রিস গেইল (২৬টি)
· এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ওভার বাউন্ডারি (ছক্কা) – ক্রিস গেইল (১৬টি)
· সবচেয়ে বেশিবার ডাক( শূন্য রান) মেরেছেন- সংযুক্ত আরব আমিরাতের কৃষ্ণ চন্দ্রন (৩ বার)
· সেরা বোলার – মিশেল স্টার্ক (২২)
· ইনিংস সেরা বোলিং- টিম সাউদি (৭-৩৩)
· হ্যাটট্রিক – (২ টি) স্টিফেন ফিন ও জেপি ডুমিনি
· সর্বনিম্ন বোলিং গড় (কমপক্ষে ২০ ওভার) – মিশেল স্টার্ক (১০.১৮)
· সর্বনিম্ন ইকোনমি রেট (কমপক্ষে ২০ ওভার) – মিশেল স্টার্ক (৩.৫০)· এক ইনিংসে সর্বনিম্ন ইকোনমি রেট – ড্যানিয়েল ভেট্টোরি (১.৮০)
· এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান দিয়েছেন – জেসন হোল্ডার (১০৪ রান)
· সেরা উইকেটরক্ষক – ব্র্যাড হাডিন (১৬ ডিসমিসাল)
· এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ডিসমিসাল – সরফরাজ আহমেদ (৬টি)
· সবচেয়ে বেশি ক্যাচ – রাইলি রুশো (৯ ক্যাচ)
· এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ক্যাচ – সৌম্য সরকার ও উমর আকমল (৪টি)