জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট বলছে, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মানুষ নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দরিদ্র দেশগুলোতে বসবাসকারী নারী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ এই সমস্যায় ভুক্তভোগী হচ্ছেন সবচেয়ে বেশি।
জাতিসংঘের ব্রডব্যান্ড কমিশন সোমবার প্রকাশিত তাদের এ রিপোর্টে বলেন, তারা যা আশা করেছিলেন সে অনুযায়ী না হলেও এ বছরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারি মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। যদিও ৪৮টি দরিদ্র দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পায় না।
রিপোর্ট থেকে জানা যায়, পৃথিবীর ৫৭ শতাংশ মানুষ অর্থাৎ প্রায় ৪ বিলিয়ন জনসংখ্যা এখনো নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছে না। যদিও জাতিসংঘের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বের ৬০ শতাংশ মানুষকে ইন্টারনেট ব্যবহারের আওতায় আনা। কিন্তু তারা এখনো সে লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেকটা দূরে রয়েছে।
এ ব্যাপারে তারা বলছেন, গ্রামাঞ্চল এবং বিচ্ছিন্ন অঞ্চলগুলোতে সহজে ইন্টারনেট সংযোগ না পৌঁছানয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে না। এছাড়া মোবাইল অপারেটরগুলোও ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য প্রচুর টাকা চার্জ করছে।
তবে সবচেয়ে সমস্যায় রয়েছেন ভাষাগত সংখ্যালঘুরা। পৃথিবীর প্রায় ৭ হাজার ভাষার মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ ভাষার ব্যবহার রয়েছে ইন্টারনেটে। একারণে এসব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গেলে ভাষা না বুঝতে পারার মত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে জরিপ চালিয়ে দেখা গিয়েছে, সেখানকার পুরুষদের তুলনায় ২৫ শতাংশ কম নারী ইন্টারনেট ব্যবহারের করেন। সাহারা অঞ্চলের কিছু দেশে এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ।
রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি মানুষ নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এর পরিমাণ ৪৬.৬ শতাংশ। ইউরোপে ব্যবহারকারী রয়েছে ২৩.৮ শতাংশ এবং আমেরিকাতে ২২.৭ শতাংশ। আফ্রিকা, আরব এবং কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো এ ব্যাপারে এখনো অনেক পিছিয়ে আছে।