ঘুম। আহ্ শান্তির ঘুম। এই ঘুম প্রত্যেক মানুষের জন্যই প্রয়োজন। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মানুষের ওপর শারীরিক এবং মানসিক নানা ধরণের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুম মানুষের ইচ্ছাশক্তিকেও প্রভাবিত করে।
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মানুষের ইচ্ছাশক্তির নানাবিধ পরিবর্তন হতে পারে। যদিও ব্যাপারটি শুনতে একটু অদ্ভুত কিন্তু এটা মোটেও অস্বাভাবিক নয়।
মানুষের ঠিক কতক্ষন ঘুমানো প্রয়োজন তা নির্ভর করে কিছু বিষয়ের ওপর। এক্ষেত্রে জেনেটিক্স এবং বয়সের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সেই সাথে আরও কিছু বিষয় জড়িত রয়েছে। তবে গড়ে একজন মানুষের দিনে ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।
কিন্তু বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনেক মানুষ তাদের প্রয়োজনের তুলনায় কম ঘুমায়। ৬টি দেশের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে ২৯-৬৬ শতাংশ মানুষ পরিমাণমত ঘুমায় না।
ঘুম এবং ইচ্ছাশক্তি কীভাবে পরস্পর জড়িত সেটা বুঝতে বিজ্ঞানীরা কিছু গবেষণা চালান। তাদের এই গবেষণা Frontiers in Human Neuroscience পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কম ঘুমানো মানুষ কোন কাজ করার ব্যাপারে প্রেরণা বা তাড়না কম অনুভব করেন। তাদের মনোযোগ কমে যায় এবং তারা বিভিন্ন বিতর্কিত ও বিপদজনক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। ঘুম মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণকে মূলত দুই ভাবে প্রভাবিত করে।
প্রথমত, এর ফলে মানুষের ইচ্ছাশক্তি ব্যবহার করার ক্ষমতা কমে যায়। দ্বিতীয়ত, আত্মনিয়ন্ত্রণ করার জন্য মানুষের যে শক্তির প্রয়োজন হয় তা কমে যায়।
মানুষের মস্তিষ্কের ছবি নিয়েও এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। মানুষ যখন তার আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে বা কোন কিছু করার তাড়না অনুভব করে তখন তার মস্তিষ্কের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স অংশের কার্যকারিতা বেড়ে যায়।
কিন্তু মানুষ যদি কম ঘুমায় তাহলে মস্তিষ্কের এই অংশ দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কমে যায়।
তবে আরও কিছু ক্ষেত্রে ঘুম ও ইচ্ছাশক্তির সম্পর্ক প্রভাব বিস্তার করে। মানুষের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা, বিচার-বিবেচনার ক্ষমতা এবং মনোযোগ বাধাগ্রস্ত হতে পারে যদি সে কম পরিমাণে ঘুমায়। একই সাথে সে প্রায় সময়ই নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতে পারে।
তাই নিদ্রাহীনতাকে অবহেলা না করে পর্যাপ্ত ঘুমের ব্যবস্থা নিন।