বয়স হলে মানুষের চামড়ায় ভাঁজ পড়ে, বলিরেখা দেখা যায়। বার্ধক্যজনিত কারণেই মূলত এমনটা ঘটে। তবে মানুষ ছাড়াও প্রাণিজগতের আরও বেশ কিছু প্রাণীর দেহের চামড়ায় ভাঁজ দেখতে পাওয়া যায়।
তবে মানুষের মত বার্ধক্যজনিত কারণে তাদের চামড়ায় ভাঁজ দেখা দেয় না। বরং তাদের শারীরিক প্রয়োজনে বা তাদের বেঁচে থাকার সুবিধার্থেই প্রাকৃতিক নিয়মে এই বলিরেখা তাদের দেহে থাকে।
হাতি
হাতিদের দেহে ঘাম বের হওয়ার জন্য লোমকূপ অনেক কম থাকে। এতো বড় একটা দেহ থেকে তাপ নির্গত হতে এত অল্প সংখ্যক লোমকূপ যথেষ্ট নয়। তাই তারা তাদের দেহের তাপ বের করে দিতে তাদের ঢিলেঢালা চামড়া ব্যবহার করে।
হাতির কুঁচকানো চামড়ার ভাঁজে ভাঁজে আর্দ্রতা আটকে থাকে। ফলে এই আর্দ্রতা বাষ্পীভূত হতে সময় বেশি লাগে। ফলে হাতির দেহ ঠাণ্ডা থাকে। এই কারণে যেসব হাতি খোলামেলা সাভানা অঞ্চলে সূর্যের তাপের নিচে বসবাস করে তাদের চামড়ায় ভাঁজ বেশি থাকে। সে তুলনায় যারা বন-জঙ্গলের ঠাণ্ডা পরিবেশে বাস করে তাদের চামড়ায় ভাঁজ তুলনামূলক কম থাকে।
ন্যাকেড মোল র্যাট
শুধুমাত্র হাতিই নয়, ন্যাকেড মোল র্যাট নামক এক প্রজাতির ইঁদুরও তাদের চামড়ার ভাঁজের কারণে বিশেষ সুবিধা পেয়ে থাকে। এইরকম ত্বকের কারণে তারা সহজে নড়াচড়া করতে পারে।
ইঁদুরজাতীয় প্রাণীরা গর্তে বাস করে। সরু গর্তে তাদের নড়াচড়া এবং ঘুরার জন্য চামড়ায় ভাঁজ থাকাটা সুবিধাজনক। কিন্তু ন্যাকেড মোল র্যাটের দেহে কোন লোম থাকে না। একারণে তাদের দেখতে খুবই অদ্ভুত লাগে।
ন্যাকেড মোল র্যাটের আরেকটা বিশেষত্ব হচ্ছে এরা অন্যান্য ইঁদুর প্রজাতির চাইতে অনেক বেশি দিন বাঁচে। ২০১৩ সালে বিজ্ঞানপত্রিকা ‘নেচার’ জানায়, যেসব রাসায়নিক উপাদানের কারণে ন্যাকেড মোল র্যাটের এরকম ঝুলন্ত চামড়া তৈরি হয় সেসব উপাদানের কারণেই এরা বেশিদিন বাঁচে।