কোয়ালা (Koala) এক ধরণের বৃক্ষবাসী (Arboreal), তৃণভোজী (Herbivore) ও নিশাচর (Nocturnal) প্রাণী। এই প্রাণীর পেট থলিযুক্ত (Marsupial)। প্রকৃতিগতভাবে এদের অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বেশী দেখা যায়। Phascolarcitdae গোত্রের মধ্যে একমাত্র থলিযুক্ত প্রাণী কোয়ালা বর্তমানে রয়েছে। কোয়ালা সম্পর্কে আজব কিছু তথ্য হলঃ
- কোয়ালাকে কোয়ালা বেয়ার ডাকা হলেও কোয়ালা আসলে বেয়ার (Bear) বা ভাল্লুক প্রজাতির না। ভাল্লুক ও কোয়ালা দুটি ইকর্ডাটা পর্বের ও ম্যামেলিয়া শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত হলেও এদের বর্গ, গোত্র, গণ, প্রজাতি সবই আলাদা। ভাল্লুক Ursidae গোত্রের ও কোয়ালা Phascolarcitdae গোত্রের।
- ২০ মিলিয়ন বছর পূর্বের কোয়ালার জীবাশ্ম (fossil) অস্ট্রেলিয়াতে পাওয়া যায়।
- কোয়ালারা দিনের মধ্যে ২০ ঘণ্টা ঘুমিয়ে কাটায়। তারা ইউক্যালিপটাস (Eucalyptus) গাছের ডালে থাকে এবং সেখান থেকে পাতা ছিঁড়ে খায়। তারা এতোটাই ঘুমকাতুরে যে তারা একটি পাতা ছিঁড়ে পুরোটা খেতেও পারে না, তার আগেই আবার ঘুমিয়ে পড়ে।
- শুধুমাত্র ইউক্যালিপটাস গাছের পাতা খেয়ে তারা জীবন পাড় করে দেয়। তাও ১০০ ধরনের ইউক্যালিপটাস এর মধ্যে তারা শুধু ৩০ ধরনের ইউক্যালিপটাস গাছের পাতা খায়।
- কোয়ালা এক দিনে প্রায় এক কিলোগ্রাম পাতা খায়, এবং আগামী আট-নয় দিনের জন্য সেই খাবার পেটে সঞ্চয় করে রেখে দেয়।
- কোয়ালারা শুধু পাতা খেয়ে থাকে ও সেই পাতা থেকেই তাদের জলয়োজন হয়, দেহের আদ্রতার চাহিদা পূরণ হয়। আদিবাসী ভাষায় কোয়ালা এর অর্থ পানিশুন্য বা পানি ছাড়া। পানি না খেয়ে থাকতে পারে বলেই তাদের এই নামকরণ। কিন্তু মাঝে মাঝে গ্রীষ্মকালের প্রখর তাপদাহে তারা ডিহাইড্রেশনে ভুগে।
- গর্ভে ধারণের ৩০ দিনের মধ্যে কোয়ালা জন্মগ্রহন করে এবং জন্মের সময় বাচ্চা কোয়ালাটি একটি শিমের বীচির সমান হয়। বাচ্চা কোয়ালা জন্মের পর অন্ধ ও পশমহীন থাকে। বেবি বা বাচ্চা কোয়ালাদের ‘জোয়ী’ (joey) বলা হয়। তারা জন্মের পর ৬ মাস পর্যন্ত মায়ের থলিতে থাকে।
- কোয়ালাদের মানুষের মত আঙ্গুলের ছাপ বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট রয়েছে।
- কোয়ালারা খুব ভালো সাঁতার কাটতে পারে। ধারণা করা হয় তারা নদী সাঁতরে পাড় করতে সক্ষম।
- দিনের শুধুমাত্র ১৫ মিনিট তারা ঝুলন্ত অবস্থায় নিজের জায়গা পাল্টানোর জন্য ব্যয় করে।
- আইনতভাবে কোয়ালাকে পোষা প্রাণী হিসেবে রাখা যায় না।