পৃথিবীর সদৃশ আরেকটি গ্রহ পাওয়া গিয়েছে যার আয়তন আমাদের বসবাসরত পৃথিবীর প্রায় দ্বিগুণ- NASA থেকে এই ঘোষণাটি চাউর হবার পরপরই আরেকটি সংবাদ সামাজিক যােগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, লন্ডনে দুপুর দেড়টায় আকাশ থেকে এক দেবদূত মাটিতে পড়েছেন।
বৃদ্ধ দেবদূতকে লন্ডনের একটি রাস্তায় উল্টে পড়ে থাকতে দেখা যায় এবং তার আশপাশে আপেলের টুকরোও পড়ে থাকতে দেখা যায়। দেবদূতের দুটি পাখা আছে। কিন্তু পাখা দুইটিতে পালকের পরিমান খুব কম। দেবদূতের পাখা মেলে রাখা অবস্থাটিকে দেখে মনে হচ্ছিল, হয় তিনি ঘুমাচ্ছেন অথবা মারা গিয়েছেন।দুপুর বেলা রাস্তায় পড়ে থাকা এই দেবদূতকে দেখার পর পর পরই কালো পোশাকধারী পুলিশ এসে জায়গাটিকে জাল দিয়ে ঘিরে ফেলে।
ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলােতে আকাশ থেকে মাটিতে আছড়ে পড়া দেবদূতকে নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। পৃথিবী কি আসলেই ধ্বংসের পথে? স্বর্গ থেকে নেমে আসা এই পরীকে কি ঈশ্বর মানবজাতির কল্যাণে পাঠিয়েছেন? শয়তানের ধাক্কায় কি সে পড়ে গিয়েছে? অথবা এই বৃদ্ধ বয়সে আপেল খেতে খেতে হঠাৎ মৃত্যুর কারণেই কি সে মাটিতে পড়ে গেলো? নাকি এই ছবি শুধুই ফটোশপের কীর্তি? এই নিয়ে যখন নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে ঠিক তখনই এই বৃদ্ধ পরীর রহস্য উন্মোচিত হয়।
বেইজিং আর্টিস্ট সান ইয়ুয়ান(San Yuan) ও পেঙ্গু ইয়ু (Pengu Yu)চায়নার দুইজন খুব বিতর্কিত শিল্পী যারা মানুষের মৃতদেহ, টিস্যু, বিশীর্ণ দেহ, জীবিত পশু থেকে নানা উপকরন সংগ্রহ করে তাদের শিল্প চর্চার জন্য সমালোচিত। তাদেরই নতুন তৈরি একটি শিল্পকর্ম হলো এই ‘এঞ্জেল’ (Angel)’। যা তাদের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হিসেবে দাবি করছেন তারা। এই দুই শিল্পী অত্যন্ত বাস্তব অতিপ্রাকৃত একটি মূর্তি বা স্কাল্পচার তৈরি করেছেন, যা সাধারন মানুষকে ভড়কে দিতে পারে সহজেই।
এই মূর্তিটি সিলিকা জেল, ফাইবার গ্লাস ও স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি। এই মূর্তি তৈরিতে কোন করাল বা মৃতদেহের অংশ (Macabre parts) ব্যবহার করা হয়নি।
এই মূর্তিটি তৈরির আসল উদ্দেশ্য ছিলো অতিপ্রাকৃতিক বিষয়গুলোকে জাগতিক বিষয়ে রুপান্তর করা সর্ম্পকে সবার দৃষ্টিগোচর করা।
‘এঞ্জেল’ হল ঈশ্বরের পাঠানো সেই দূত যা তার সকল শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। যে ঈশ্বরের ইচ্ছা বহন করে আনতে পারছে না এবং যারা ঈশ্বরের এই সৃষ্টিতে বিশ্বাস করে তাদের সাহায্য করতে পারছে না!
সান ইয়ুয়ান ও পেঙ্গু ইয়ু-এর ধারনা ছিল, তাদের সৃস্ট এই দেবদূত দেখে মানুষের মনে প্রশ্ন জাগবে কেন একটি অতিপ্রাকৃত ঐশ্বরিক সৃষ্টি জাগতিক বা একেবারে মানুষের মত দেখতে হবে? মানুষের মন থেকে এই প্রশ্নটি জানতে চাওয়াই ছিল এই মূর্তি তৈরির মূল লক্ষ্য।
কিন্তু তাদের ধারনা ভুল করে দিয়ে, সর্বাধিক মানুষ ‘এঞ্জেল’-এর জাগতিক রূপ দেখে আরও নিশ্চিত হতে থাকলো যে পড়ে থাকা এই দেহটি আসলেই ঈশ্বরের দূত। এবং তা দেখতে একদম মানুষের মত।
মানুষের মত চুল, মানুষের মত দেহ, মুখের বলিরেখাগুলো দেখতেও একদম মানুষের মত! পাখা থাকার কারনে একটু অদ্ভুত দেখতে হলেও তারা এই মূর্তিটিকে সত্যিকারের স্বর্গ থেকে নেমে আসা দেবদূত ভাবতে শুরু করেন অনেকে। মানুষের ভ্রান্তি বিশ্বাসে পরিণত হবার আগেই এই বৃদ্ধ পরীর রহস্য সকলকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
জেনে রাখা ভাল, বাইবেলের বর্ণনা অনুসারে চেরুবিম (Cherubim) ও সেরাফিম (Seraphim) হল দুই ধরনের দেবদূত যাদের পাখা আছে। হিব্রু ১:১৪ অনুযায়ী দেবদূত হল সম্পূর্ণ আধ্যাত্মিক সৃষ্টি ও তাদের পাখা আছে, এই বিশ্বাসটিকে অনুসারীরা সঠিক হিসেবেই দাবি করেন।